সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

প্রধান দুই দলের ৪৩ মনোনয়ন প্রত্যাশীর দৌড়ঝাঁপ

প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. হাবিবুল্লাহ, নেছারাবাদ (পিরোজপুর) থেকে : নেছারাবাদের স্বরূপকাঠি পৌরসভা নির্বাচনের আমেজ কাটতে না কাটতে উপজেলার ১০ ইউনিয়নের সাবেক ১লাখ ৪৩ হাজার ১২৭ জন ভোটারের মধ্যে তফসিল ঘোষণার আগেবাগেই বইছে আসন্ন ইউপি নির্বাচনী হাওয়া। প্রথম বারেরমত দলিয় প্রতীকে স্থানিয় সরকার নির্বাচন ঘোষণায় মনোনয়ন লুফে নিতে সম্ভাব্য ৪৩ জন প্রার্থীর কেবলমাত্র ক্ষমতাশীল আওয়ামী লীগের ৩৬ জন প্রার্থী চষে বেড়াচ্ছে মাঠঘাট। তাদের পাশা-পাশি ওই ১০ ইউনিয়নের ১৪৩ গ্রামের ৩০টি সংরক্ষিত মহিলা আসন ও ৯০টি সাধারণ ওয়ার্ডে সদস্য পদের জন্য দৌড়-ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক নেতা কর্মীও। আর মনোনয়ন প্রত্যাশি সম্ভাব্য ওই প্রার্থীর হাতেগোনা বিএনপির তিন প্রার্থী বাদে বাকি বর্তমান চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য নুতন, পুরাতন মুখ সবাই আওয়ামী লীগ পরিচয়ে। আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আ.লীগের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকায় প্রতিটি ইউনিয়নে দলের সর্বজন গ্রহণযোগ্য একক প্রার্থী দিতে ঊর্ধ্বতন নেতারা বিব্রতকর অবস্থায়ও পড়তে পারেন বলে জানিয়েছেন বয়োজ্যেষ্ঠ কয়েক জন আওয়ামী লীগ নেতা। এ ব্যাপারে, স্বরূপকাঠি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র মো. গোলাম কবির বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষণা অনুযায়ি দল থেকে প্রতি ইউনিয়নে যোগ্য একক প্রার্থী দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আরো ভাল বলতে পারবেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. মহিউদ্দীন মিয়া বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে উপজেলায় বসে ভোটের মাধ্যমে একক প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। তবে কোন প্রক্রিয়ায়, কবে নাগাদ এ কার্যক্রম শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি। এদিকে শাসক দলের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগসহ নৌকা প্রতীক পেতে উপর মহলে তদবির করছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী সিংহভাগই যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন এমপির সাথে। প্রার্থীরা মনোনয়নের আশায় বলতে গেলে নিয়ম মাফিক নাওয়া-খাওয়া ভুলে পড়ে থাকছেন ঊর্ধ্বতন নেতাদের কাছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা কাক্সিক্ষত মনোনয়ন পেতে উপজেলার নেতা ও সংসদ সদস্যেসের নজর কাড়তে ছবি সম্ভলিত ডিজিটাল ব্যানার টাঙিয়েছেন পৌরসভাসহ ইউনিয়নের জনগুরুপ্তপূর্ণ স্থানে। অপরদিকে, বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখনো প্রকাশ্যে নির্বাচনী কোন তোড়জোড় শুরু না করলেও তারাও দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হতে উপরে মহলে দচ্ছেন ধরনা। ভিতরে ভিতরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিচ্ছেন নির্বাচনি প্রস্তুতি। উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা যায়, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ি প্রথম ধাপে ইউপি নির্বৃাচনের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত হবে নেছারাবাদ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। সে হিসাবে মার্চে অনুষ্ঠিত হবে এ উপজেলায় ইউপি নির্বাচন। তাই তফসিল ঘোষণার আগেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়ন নিতে উপজেলা ও জেলার দলীয় সাংসদের মন জয়ে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সাথে সাথে যে যার স্ব-স্ব ইউনিয়নে চালিয়ে যাচ্ছেন গণসংযোগ। পথে-ঘাটে করছেন কুশল বিনিময়। মোট কথা, এখন উপজেলা ও ইউনিয়নের কোন এলাকার পাবলিক প্লেস বা চায়ের দোকানে এক সাথে ৪-৫ জন লোক মিলিত হলে আলোচনায় উঠে আসছে কে পাবে দলিয় মনোনয়ন, কে করতে পারবে এলাকার কাক্সিক্ষত উন্নয়ন। এবারের নেছারাবাদে আসন্ন ইউপি নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশি সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, ১নং বলদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন, মো. হুমাউন কবির, মো. নজরুল ইসলাম, বর্তমান চেয়ারম্যান মো.শাহিন আহম্মেদ, মো. জসিম উদ্দিন,। ২নং সোহাগদল ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আঃ রশিদ, মো. এনামুল হক বাদশা, সাবেক চেয়ারম্যান আকরামুল ইসলাম বাবুল, মো. মিজানুর রহমান চাঁন, মো. শাহআলম। ৩নং স্বরূপকাঠি ইউনিয়নে থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মাশরুল আলম রাজীব, বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আলআমীন পারবেজ, স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নাছির তালুকদার। ৪নং আটঘর কুড়িয়ানা ইউনিয়নে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ি বাবু শংকর প্রসাদ হালদার, তাপস মজুমদার, এবং বর্তমান চেয়ারম্যান শেখর কুমার সিকদার। ৫নং জলাবাড়ী ইউনিয়নে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শান্ত মজুমদার চন্দন, এড. মানিক লাল বড়াল, শংকর চন্দ্র, থানা যুবলীগের সদস্য স্বাধীন আইচ সরকার, বর্তমান চেয়ারম্যান মো. তৌহিদুল ইসলাম, মো. মেহেদী হাসান। ৬নং দৈহারী ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান মো.মিজানুর রহমান মিন্টু, মো. দুলাল শেখ, অনিমেশ মন্ডল, মো. ইউনুচ আলী। ৭নং গুয়ারেখাতে বর্তমান চেয়ারম্যান সুব্রত ঠাকুর, মো.আখতারুজ্জামান, হীরা লাল বড়াল, সঞ্জীব কুমার হালদার, পল্টু রায়, মো. নুরুল আমীন এবং নারী নেত্রী শান্তা সূতার। ৮নং সমুদয়কাঠিতে ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মো.হুমাউন বেপারী, বর্তমান চেয়ারম্যান এম কে সবুর তালুকদার, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. জসিম তালুকদার, ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি এড. নিখিল মন্ডল। ৯নং সুটিয়াকাঠিতে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হক, সাবেক চেয়ারম্যান মো. গাউস মিয়া, মো.রুহুল আমীন। এছাড়া, সর্বশেষ ১০নং সারেংকাঠি ইউনিয়নের সম্ভাব্য প্রার্থী হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান মো.সায়েম শেখ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা, মো. বেলায়েত। নির্বাচনে মনোনয়নের আশা নিয়ে ৮নং সমুদয়কাঠি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমাউন বেপারী বলেন, ৮৯ সালে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম, ৯১ তে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ধারাবাহিকভাবে বর্তমানে ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে রাজনীতিতে নিজেকে সোপে দিয়েছি। তাই তিনি আশা করছেন দল থেকে তাকে মূল্যায়ন করা হবে। এভাবে মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদি হয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের জন্য বিভিন্ন ত্যাগের কথা বলেন এ প্রতিবেদকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন