ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুলে ২০১৬ সালের পঞ্চম শ্রেণীর চূড়ান্ত মডেলটেস্ট পরীক্ষার ৬টি স্কুলের খাতা মূল্যায়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিভাবক ও শিক্ষকরা। তারা ওইসব খাতা পুনর্মূল্যায়নের দাবি এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকরা জানান, কবিরপুর সরকারি মডেল প্রাইমারি স্কুলে ২০১৬ সালের পঞ্চম শ্রেণীর চূড়ান্ত মডেলটেস্ট পরীক্ষার ঝাউদিয়া সরকারি প্রাইমারি স্কুল, কবিরপুর মডেল সরকারি প্রাইমারি স্কুল, নতুনকুঁড়ি প্রাইমারি স্কুল, কবিবপুর কিন্ডারগার্টেন, জাবালুন্নুর একাডেমি ও নিও কিন্ডারগার্টেন-এর ২৪৫ জন শিশু শিক্ষার্থী অংশ নেয়। কবিরপুর মডেল সরকারি প্রাইমারি স্কুল কর্তৃপক্ষ ললিতমোহন সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ওইসব খাতা মূল্যায়নের দায়িত্ব দিলে তারা আবার অন্য কয়েকটি স্কুলকে খাতা মূল্যায়নের দায়িত্ব দেয়। এতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও অন্য স্কুলের শিক্ষকরা জানান। তারা জানান, কবিরপুর মডেল সরকারি প্রাইমারি স্কুলের ২ জন শিক্ষকের সন্তান ওই স্কুলে পড়ার সুবাদে তাদের বেশি নম্বর দেয়া হয়। ৭০৭৫ ও ৭০৭৭ নম্বর পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত নম্বর দিলেও ৭০৭৬ নম্বর পরীক্ষার্থীকে কম নম্বর দেয়া হয়েছে। তাছাড়া অধিকাংশ খাতাই অদক্ষ ব্যক্তির দ¦ারা মূল্যায়িত হয়েছে। ফলে প্রশ্নের শুদ্ধ উত্তরে নম্বর না দিয়ে ভুল নম্বরে কোথাও কোথাও বেশি করে নম্বর দেয়া হয়েছে। কবিরপুর কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ আবদুল মতিন জানান, তার স্কুলের এক মেধাবী শিক্ষার্থীর খাতায় অনেক কম নম্বর দেয়ার ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মনে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। শৈলকুপা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) জাহিদ হোসেনের সাথে এ বিষয়ে আলাপ করলে তিনি এসব অভিযোগ সত্য বলে স্বীকার করে বলেন, তিনি সকল খাতা পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া কোমলমতি শিশুদের সাথে প্রতারণা, নিজদের সন্তানদের বেশি নম্বর পাইয়ে দেয়া এবং প্রশ্নের উত্তর ভুল মূল্যায়নের সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই শিক্ষা অফিসারের মতে, পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হলেও কবিরপুর মডেল সরকারি প্রাইমারি স্কুলের চলতি বছরের চূড়ান্ত মডেলটেস্ট পরীক্ষার ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরের বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার সময় প্রাথমিক স্কুলের এক শ্রেণীর শিক্ষক ব্যাপক দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে থাকেন। অধিকাংশ স্কুলেই স্থানীয় শিক্ষকরা চাকরি করায় তারা নির্বিঘেœ এসব অপকর্ম চালিয়ে যান বলেও শিক্ষার্থীদের অভিভাবক জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন