শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

ড্রাগ লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই বিশ্বনাথে চলছে ওষুধ বাণিজ্য

আব্দুস সালাম, বিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় ড্রাগ লাইসেন্স, কেমিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাড়াই চলছে রমরমা ওষুধ বাণিজ্য। সরকারি রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই এন্টিবায়েটিক, ঘুমের ঔষুধসহ সব ধরনের ওষুধ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের কোন রকম নজরদারি না থাকায় আইনের তোয়াক্কা না করে বিশ্বনাথের অলিগলিতে গড়ে উঠেছে ওষুধের দোকান। অনেক ফার্মেসিতে কেমিস্ট বা ফার্মাসিস্ট না থাকলেও সবধরনের রোগের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া অবাধে বিক্রি হচ্ছে যৌন উত্তেজক টেবলেট ও মহিলাদের গর্ভপাতের ওষুধ। যা ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ি সম্পূর্ণ হারাম। এতে করে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি মধ্যে পড়েছে এ উপজেলাবাসী। এভাবে ব্যবসা পরিচালনার জন্য ওষুধ প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করছেন সমাজ বিশ্লেষকরা।
প্রতিষ্ঠিত ও সম্মানজনক ব্যবসার মধ্যে ফার্মেসি ব্যবসা অন্যতম। এই ব্যবসা করার জন্য বাধ্যতামূলক হচ্ছে, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে ড্রাগ লাইসেন্স নেয়া এবং প্রত্যেক ফার্মেসিতে একজন সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট থাকা। অথচ বিশ্বনাথ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে রয়েছে ৩শতাধিক ওষুধের দোকান। এর মধ্যে অধিকাংশ ফার্মেসিতে নেই ড্রাগ লাইসেন্স কিংবা সনদপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট। এদের অনেকের বিরুদ্ধে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই রোগীদের অ্যান্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন রোগের স্পর্শকাতর ওষুধ বিক্রিরও অভিযোগ আছে। এদিকে গত দু’সপ্তাহ আগে ফার্মেসিতে মেয়াদোর্ত্তীণ ওষুধ রাখার দায়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয় থেকে দুটি ফার্মেসিতে দায়সারা জরিমানা করেছেন।
জেলা ওষুধ তত্বাবধায়ক মেহেদী হাসানের সূত্র মতে, অ্যালোপ্যাথিক, হোমিওপ্যাথিক ও ইউনানি মিলে বিশ্বনাথে প্রায় ২২০ থেকে ২৩০টি দোকানে ড্রাগ লাইসেন্স আছে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ওষুধ তিনিই বিক্রি করতে পারবে যার ফার্মাসিস্ট ট্রেনিং আছে এবং যিনি ড্রাগ লাইসেন্স পেয়েছেন। ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ঔষধের ব্যবসা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং আইনগতভাবে দন্ডনিয় অপরাধ।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্বনাথ সদরস্থ ও উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ ফার্মেসি ব্যবসা। চিকিৎসকের ছাড়পত্র ছাড়াই ক্রেতাদের এন্টিবাইটিকসহ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট অবাধে বিক্র করা হচ্ছে। একই চিত্র উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন বাজারে গ্রামে গড়ে ওঠা ফার্মেসিগুলোতেও।
বিশ্বনাথ নতুন বাজারস্থ মেসার্স সন্ধানী ফার্মেসির মালিক নাছির উদ্দিন ইনকিলাবকে জানান, আমাদের ওষুধের দোকানে সব সময় ফার্মাস্টি থাকে এবং রেজির্স্টাট চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া এন্টিবায়েটিক ওষুধ দেয়া হয় না।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে এক ফার্মেসির মালিক বলেন, ‘ড্রাগ লাইসেন্স পাওয়াটা অনেক কঠিন ব্যাপার, তাই লাইসেন্সের জন্য আবেদন করিনি। শুনেছি, আবেদন করলে নানা অজুহাতে অফিসের লোকজন টাকা-পয়সা চায়। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়াইতো ওষুধ বিক্রয় করছি, কোন সমস্যা তো হচ্ছে না। ওষুধ প্রশাসনের লোকজন এলে কিছু দিলে চলে যাবে, এসব এখন সিস্টেমে বোঝেন না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রহমান বলেন, মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান না চালিয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে হবে। তবেই এসব অবৈধ ব্যবসায়িকে দমন করা সম্ভব নয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Harunur Rashid ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৩২ এএম says : 0
What is the point of having some kind of so called authority, these people will easily bribe these bottom feeders anyway.
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন