সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

দেড় যুগেও শেষ হয়নি

মুন্সীগঞ্জ-ঢাকা রুটের সংযোগ সড়ক কচ্ছপ গতিতে চলছে মোল্লারহাট সেতুর নির্মাণ কাজ

মঞ্জুর মোর্শেদ, মুন্সীগঞ্জ থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরের সাথে ঢাকার যোগাযোগের প্রধান সংযোগকারী বেতকা-তেঘড়িয়া সড়কটি দীর্ঘ দেড় যুগেও সমাপ্ত হয়নি। বর্তমান সরকার যেখানে সড়ক যোগাযোগের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব আরোপ করেছে সেখানে বেতকা-তেঘড়িয়া সংযোগ সড়কটির নির্মাণ কাজ দীর্ঘ দেড় যুগেও সমাপ্ত না হওয়ায় এলাকাবাসী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে। এ সেতুর অভাবে সংযোগ সড়কটি চালু হচ্ছে না। ফলে মুন্সীগঞ্জবাসীকে ঢাকায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অর্থ বরাদ্ধের অভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশের পর অর্থ বরাদ্দ দিলেও সতুটির নির্মাণ কাজ আবার শুরু হয়। অজ্ঞাত কারণে বর্তমানে কচ্ছপ গতিতে চলছে মোল্লারহাট সেতুর নির্মাণ কাজ।
মুন্সীগঞ্জ-ঢাকা সুষ্ঠু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ২০০২ সালে বেতকা-তেঘড়িয়া রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রায় ২০.৩৭ কি.মি দীর্ঘ রাস্তাটি ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘড়িয়া হয়ে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে মিলিত হয়েছে। বেতকা-তেঘড়িয়া সড়কটি চালু হলে মুন্সীগঞ্জের সাথে সড়ক পথে ঢাকার দূরত্ব যেমন কমে আসবে তেমনি যানজট মুক্তভাবে ঢাকায় যাতায়াত করা যাবে। পাশাপাশি এ এলাকায় কৃষিভিত্তিক শিল্পের প্রসার ঘটবে। বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড জোরদার হবে এবং ঢাকার দক্ষিণ দিকে উপশহর সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে।
বেতকায় বিসিকের বৈদ্যুতিক শিল্পনগরী গড়ে উঠছে। রাস্তাটি চালু হলে মুন্সীগঞ্জ, টঙ্গীবাড়ি ও সিরাজদিখানের ঢাকাগামী যাত্রীরা খুব সহজে যানযট মুক্তভাবে ত্রিশ মিনিটে ঢাকায় যেতে পারবে।
সদর উপজেলার রামপালের কাঁচা মালের আড়ৎদার কালাম বেপারী জানান, সংযোগ সড়কটি চালু হলে এখান থেকে প্রতিদিন কাচামালের ট্রাক স্বল্প সময়ে ও স্বল্প খরচে ঢাকার আড়তে পরিবহন করা যাবে। নিয়মিত অফিসযাত্রী আবুল কালাম বলেন, সংযোগ সড়কটি চালু হলে সদর ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলার নিয়মিত অফিসগামী যাত্রীরা সহজে বাবু বাজার ব্রিজ হয়ে মতিঝিল চলে যেতে পারব।
আবদুল্লাপুরের ডা. আব্দুল আলিম জানান, মোল্লারহাট সেতুটির নির্মাণ কাজ দীর্ঘ ২ বছরেও শেষ না হওয়া দুঃখজনক। বালুরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সড়কটি চালু হলে এ অঞ্চলের কৃষিপণ্য সহজে ঢাকার কারওয়ান বাজারে পরিবহন করা যাবে। তিনি জানান, একমাত্র বাধা মোল্লারহাট সেতুটির নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন করে সংযোগ সড়কটি চালু করা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. শাহজাহান আলী জানান, প্রায় ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২শ’ ৫২ মিটার দীর্ঘ মোল্লারহাট সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। গত বছর এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের অভাবে দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ ছিল। অর্থ বরাদ্ধ পাওয়ায় আবার কাজ শুরু হয়েছে। প্রথম ঠিকাদার সময় মতো কাজ শেষ করতে না পারায় তাকে দেয়া কার্যাদেশ বাতিল করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে সিরাজদিখান প্রান্তে দুটি স্লাব বসবে। নদীর মাঝের বাকি দুটি পিলারের কাজ দ্রুতই শুরু হবে। আগামী বছরের নভেম্বরের মধ্যে সেতুর এবং এপ্রোচসড়কের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে ডিসেম্বরে যানবাহন চলাচলের জন্য বেতকা-তেঘড়িয়া সংযোগ সড়কটি খুলে দেয়া হবে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর তেঘড়িয়া হতে বেতকা পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে উন্নত করতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এতে বেতকা-তেঘড়িয়া সড়কটি চট্টগ্রাম-নারায়নগঞ্জ-মুক্তারপুর-মাওয়া মহাসড়ক নির্মাণের যে পরিকল্পনা রয়েছে তার সাথে সংযোগ হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন