ফুলপুর (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা
বর্তমান সরকারের বহুল আলোচিত ইউনিয়ন পর্যায়ে হতদরিদ্রদের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ময়মনসিংহের ফুলপুরে হ-য-ব-র-ল অবস্থা বিরাজ করছে। খাদ্য বিভাগ নীতিমালা লঙ্ঘন করে তালিকা প্রণয়ন, ডিলার নিয়োগসহ সকল কার্যক্রম শুরু করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ত্রুটিপুর্ণ তালিকার মাধ্যমে চাল বিক্রির কারণে ডিও প্রদান বন্ধ রেখে তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে। জানা যায়, ইউনিয়ন পর্যায়ের হতদরিদ্রদের জন্য সরকার নির্ধারিত মূল্যে কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য বিতরণ নীতিমালা-২০১৬ উপেক্ষা করে ফুলপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১০ টাকা কেজি ধরে চাল বিক্রি শুরু করে খাদ্য বিভাগ। নীতিমালা অনুযায়ী ইউনিয়ন কমিটির মাধ্যমে তালিকা প্রণয়ন ও অনুমোদন করে উপজেলা কমিটিতে প্রেরণ করার কথা এবং ইউনিয়ন কমিটির তালিকা উপজেলা কমিটি নীতিমালা অনুসরণ করে যাচাই-বাছাই পূর্বক অনুমোদন প্রদান করবে। দেখা গেছে খাদ্যবান্ধব কর্মর্সূচির কোন ইউনিয়ন কমিটি নেই। সেই সাথে উপজেলা কমিটির কয়েক সদস্যের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ সংক্রান্ত কোন সভা হয়নি। ২০১৬ নীতিমালা উপেক্ষা করে ২০১১ সালের ত্রুটিপূর্ণ তালিকা দিয়ে চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা হয়। সেই সাথে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ডিলার নিয়োগ নিয়ম মানা হয়নি। খাদ্য কর্মকর্তার দরজায় একটি নোটিশ টানিয়ে নিজেদের ইচ্ছে মত ১০ ইউনিয়নে ২০ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। চাল বিক্রির জন্য নতুন কোন তালিকা না করে ২০১১ সালের তালিকা মোতাবেক চাল বিক্রির নির্দেশ দেয়া হয়। শুরু থেকেই তালিকায় ভুয়া নাম, মৃত ও সচ্ছল ব্যক্তির নামসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। ১ মাস ২০১১ সালের ত্রুটিপূর্ণ তালিকায় চাল বিক্রির পর অবশেষে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাইপূর্বক নতুন তালিকা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে চাল বিক্রি বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশোধিত তালিকা করার কার্যক্রম শুরু করেন। গত কয়েক দিন যাবত ডিলারদের ডিও প্রদান বন্ধ রয়েছে। ফুলপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ১৭ হাজার ২৬২ জন সুবিধাভোগি রয়েছে। সে অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫১৭.৮৬০ মে:টন চালের চাহিদা রয়েছে। অথচ সেপ্টেম্বর মাসে ২০ জন ডিলারকে দেয়া হয়েছে মাত্র ১৯৪.৮৮০ মে:টন এবং অক্টোবর মাসে বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ২২৯.৩৮০ মেট্রিক টন চাল দেয়া হয়েছে বলে খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়। ফুলপুর খাদ্য বিভাগ রহস্যজনক কারণে চাহিদা মোতাবেক চাল সরবরাহ করেনি। যার ফলে ১০ কেজির চাল না পেয়ে ডিলারদের দ্বারে দ্বারে ঘোরছে অতি দরিদ্ররা। রূপসী ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কদ্দুছ ফকির ও আলতাব হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ১০ টাকা কেজি চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ দায়ের করেছেন। উপজেলা কমিটির সদস্য ফুলপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ও মনোয়ারা খাতুন বলেন, আমরা এ ব্যাপারে কিছু জানি না এবং উপজেলা কমিটির কোন সভা হয়েছে বলেও আমাদের জানা নেই। এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইদুর রহমান বলেন, আমরা নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করেছি। নতুন নীতিমালা আমি পরে পেয়েছি। তাই ২০১১ সালের নীতিমালা ও তালিকা অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করেছি। এখন তালিকা সংশোধনের জন্য যাচাই বাছাই হচ্ছে। তবে ২০১১ সালের ত্রুটিপূর্ণ তালিকা দিয়ে ১ মাস চাল বিতরণ হলো কেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন