চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সারের নীরব বিপ্লব ঘটেছে। কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠার পাশাপাশি দিনদিন বাড়ছে এর উৎপাদন ও চাহিদা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনকারীরা গরুর খামার থেকে গোবর ক্রয় করে এ সার তৈরি করে থাকে। এতে করে একদিকে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে না; অপরদিকে জৈব সার তৈরি হচ্ছে। এ সার উৎপাদন সহজ ও সুলভে পাওয়া যায় বলে চাষীদের মাঝে চাহিদা বাড়ছে।
লোহাগাড়া কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা কৃষি অফিস এ পর্যন্ত প্রায় দুইশত কৃষককে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি পদ্ধতি হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। বিগত ২০২০-২১ সালে প্রায় ৫০ জন কৃষককের মাঝে ভার্মি কম্পোস্ট প্রদর্শনীর জন্য বিনামূল্যে কেঁচো, খুটি, টিন, রিং ও রিং ¯øাব বিতরণ করেছে। এসব প্রদর্শনী দেখে পার্শ্ববর্তী আরো ৩০-৪০ জন কৃষক আগ্রহী হয়ে নিজ উদ্যোগে এ সার তৈরি শুরু করেছেন। উপজেলায় প্রায় ৮৫ জন খামারি ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার তৈরি করেন। এদের মধ্যে কেউ ৬টি রিং, কেউ ৪টি, কেউ ২টি রিং দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করছেন।
উপজেলার আধুনগরের কুলগাপলি, আমিরাবাদের সুখছড়ি, পূর্ব কলাউজান, পশ্চিম কলাউজান, পদুয়ার ফরিয়াদিকুল, সিকদার পাড়া, চুনতী ও পুটিবিলা এলাকার অনেক কৃষক এ সার তৈরিতে সরাসরি জড়িত। এ সার তৈরি করতে কেঁচো, গোবর, স্যানিটারী রিং এর প্রয়োজন হয়। প্রতি রিং থেকে দেড় দুই মাস অন্তর প্রায় ২০০ কেজি করে সার পাওয়া যায়। উপজেলায় প্রতি দেড় দুই মাসে প্রায় ২০ মেট্টিক টন কেঁচো সার তৈরি হয়। প্রতি কেজি সার ১৫ টাকা করে বিক্রি করে খামারীরা।
পশ্চিম চুনতির কৃষক আলফা মন্ডল জানান, তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে কেঁচো সার তৈরি করেন। তার ৬টা রিং আছে। ৩০-৪০ দিনে প্রত্যেকটা রিং থেকে প্রায় ৪৫-৫০ কেজি সার পাওয়া যায়। প্রতি কেজি সার ১৫ টাকা করে বিক্রি হয়। সার উৎপাদনের পাশাপাশি কেঁচোও উৎপাদন হয়। কেঁচো প্রতি কেজি ১ হাজার ২শত টাকা করে বিক্রি হয় বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম জানান, অন্য কম্পোস্ট তৈরির চেয়ে কেঁচো কম্পোস্ট তৈরি সহজ ও কম সময় লাগে। তাছাড়া এটি সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। এটা ব্যবহারের ফলে মাটির জৈব উপাদান বৃদ্ধি ও মাটির স্বাস্থ্য ভাল থাকে। এ সার ব্যবহারের ফলে সবজি ও ফলের প্রাকৃতিক স্বাদ ও ফলন বৃদ্ধি পায়। এটা ব্যবহার করলে রাসায়নিক সারের পরিমাণ কম দিলেও চলে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন