নাটোর জেলা সংবাদদাতা
নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের গৃহবধূ আসমা বেগমের কাছে থাকা রহস্যময় একটি ছোট কাঠের বাক্সের ভিতরে কি আছে তা না বলায় স্বামীর হাতে খুন হওয়ার প্রায় সাড়ে চার বছর পর গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামী মোঃ হাসান (২৫) এর ফাঁসির আদেশ দিয়েছে নাটোরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত। নাটোরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কাকডাংগা গ্রামের বাবা-মা হারা ইয়াতিম মেয়ে আসমা বেগম ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকুরীর সুবাদে নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের আনোয়ার আকন্দের ছেলে মোঃ হাসানের সাথে পরিচয় এবং বিয়ে হয়। বিয়ের সময় আসমা সাথে করে একটি তালাবদ্ধ ছোট কাঠের বাক্স নিয়ে আসে। স্বামী ও শ্বশুড় বাড়ীর লোকজনের অনেক চেষ্টার পরও কখনই সে এই রহস্যজনক বাক্সে কি আছে তা কাউকে দেখায়নি। অবশেষে ২০১২ সালের ১৪ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে গৃহবধূ আসমাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে তারা দেখতে পায় সেই কাঠের বাক্সে কোন কিছুই নেই। পরে রাতেই বাড়ির পাশের বরই গাছে লাশ ঝুলিয়ে আসমা আত্মহত্যা করেছে বলে চালানোর চেষ্টা করে। প্রতিবেশী মোঃ মফিজ উদ্দিন প্রাং (৪৮) পুরো বিষয়টি দেখে ফেলায় তিনি এ বিষয়ে সিংড়া থানায় অভিযোগ করেন। থানা পুলিশ অপমৃত্যু মামলা করে বিষয়টি চাপা দেয়ায় পরের বছরের ২৮ জানুয়ারি প্রতিবেশী মোঃ মফিজ উদ্দিন প্রাং পুনরায় স্বামী হাসান ও তার পিতা-মাতাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে নাটোর আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানী ও স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে নাটোরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ রেজাউল করিম গতকাল বৃহস্পতিবার আসামির উপস্থিতিতে স্বামী মোঃ হাসান (২৫) এর ফাঁসির আদেশ দেন এবং অন্য আসামীদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি সিরাজুল ইসলাম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামী পক্ষের আইনজীবী মোজাম্মেল হক মন্টু এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন