ভাত বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাবার। কিন্তু জন্মের পর থেকে ভাত না খেয়ে দীর্ঘ ৩০টি বছর পার করলেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর গৃহবধূ আছিয়া। এ নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই মানুষের কাছে।
‘মাছে-ভাতে বাঙলি’। তবে এই যুগে বাঙলির খাদ্য তালিকায় মাঝে মধ্যে মাছ না থাকলেও ভাত থাকবেই। পোলাও, বিরিয়ানি, তেহারি, খিচুড়িসহ বাহারি রকমের খাবার তৈরি হয় চাল দিয়ে। ভাতের বিকল্প হিসাবে এখনো কিছু স্থান পায়নি মানুষের কাছে। বাড়িতে ভাত আছে কিন্তু খায় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে এমনই একজন বিচিত্র্য মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে।
গৃহবধূ আছিয়া আক্তার (৩০)। উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের উওর চরপুক্ষিয়া গ্রামের মনি সরকার বাড়ি এলাকার বাসিন্দা। দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের মা তিনি। জন্মের পর থেকে বয়স অনুযায়ী ৩০ বছর পার হতে চলেছে। কিন্তু একদিনও ভাত খান নি তিনি।
সরেজমিনে বাড়িতে গিয়ে কথা হয় আছিয়া ও তার পরিবারের সাথে। কথা বলে জানা যায়, জন্মের পর থেকেই কোন দিনই ভাত মুখে নেয়নি আছিয়া। অনেক চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু কিছুতেই কাজ হয়নি। ভাত না খেয়ে একজন মানুষ কিভাবে থাকে এমন ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যেও কৌতুহলের শেষ নেই। গৃহবধূর বিচিত্র্য জীবনধারণ দেখার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ বাড়িতে আসেন।
আছিয়া আক্তারের মা হুসনা বলেন, ‘মেয়ের জন্মের পরেই দুধ-ভাতের সময় তার মুখে দুধ দিয়ে নরম করে ভাত দিলে সে নড়াচড়া করে ফেলে দেয় এবং বমি করতে থাকে। এভাবে বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেও ভাত খাওয়ানো সম্ভব হয়নি। কতো ডাক্তার কবিরাজ দেখাইছি, কিছুতেই কাজ হয়নি। বরং ভাত দেখলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ডাক্তার বলেছেন, সে যেভাবে ভালো থাকে সেভাবেই তাকে খাবার দিতে। ভাত না খেয়েও মেয়ে সুস্থ আছে এটাতেই খুশি আমি।›
গৃহবধূ আছিয়া আক্তার বলেন, ‘আমি ভাত দেখতেই পারি না। ভাত দেখলেই অস্বস্তি বোধ হয়। পরিবারকে ভাত রান্না করে দিতেও কষ্ট হয়। কিন্তু বাধ্য হয়েই ভাত রান্না করে দিতে হচ্ছে। ভাত না খেয়ে এভাবেই আমি সুস্থ আছি। তেমন কোন রোগবালাই হয়না। রুটি, কলা, চিড়া, দই ফলমূল খেয়ে বেঁচে আছি। বিয়ের পর এটা নিয়ে নানা কথা শুনতে হলেও সময়ের সাথে সাথে এখন সবকিছু স্বাভাবিক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন