সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান ও তার স্ত্রীর তিনটি লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা নিয়েছে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। এরমধ্যে ডা. মুরাদ হাসানের দুটি এবং তার স্ত্রীর লাইসেন্স করা একটি অস্ত্র জমা নেয়া হয়। এছাড়া স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসানের করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ এ আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার (নন-জিআরও) কর্মকর্তা ফুয়াদ উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গত শনিবার ওই জিডি’র তদন্তের অনুমতির জন্য আদালতে পাঠান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাজিব হাসান। তিনি তখন বলেন, জিডির কাগজপত্র আদালতে দাখিল করে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবেন সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।
এখনও ডা. জাহানারা শঙ্কায় রয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এসআই রাজিব বলেন, ধানমন্ডির বাসায় আমরা পুলিশি নজরদারি বৃদ্ধি করেছি। টহল জোরদার রয়েছে। জাহানারা এহসানের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা তাকে আশ্বস্ত করেছি।
ধানমন্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া বলেন, ডা. মুরাদের স্ত্রী তার বিরুদ্ধে নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে একটি জিডি করেছেন, তাই তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ডা. মুরাদের নামে লাইসেন্স করা অস্ত্রগুলো থানায় জমা দিতে বলি। থানার নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি গত শনিবার এসে দুটি অস্ত্র জমা দিয়েছেন। এছাড়া ডা. মুরাদের স্ত্রীও তার লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা দিয়ে গেছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনে তিনটি অস্ত্র জমা দিয়েছেন, যার মধ্যে একটি পিস্তল ও দুটি শটগান।
এর আগে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান। গতকাল বৃহস্পতিবার ধানমন্ডি থানায় এসে ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে জিডি করেন তিনি। এর আগে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চান ডা. জাহানারা এহসান।
সম্প্রতি এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে ডা. মুরাদের অশালীন ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের এই সংসদ সদস্যকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত ৭ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করলে ওইদিন রাতেই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। একইদিনে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় মুরাদ হাসানকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এর ধারাবাহিকতায় তাকে সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার মুরাদ হাসানকে তার নিজ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।এ ছাড়া মুরাদের আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিলের বিষয়েও দলের পরবর্তী কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
গত ৯ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে কানাডার উদ্দেশে দেশত্যাগ করেছিলেন তিনি। এরপর কানাডার টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলেও তাকে সে দেশে ঢুকতে দেয়া হয়নি। সেখান থেকে তাকে দুবাইগামী একটি ফ্লাইটে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু দুবাইও তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। সেখানেও ব্যর্থ হওয়ার পর আর উপায় না পেয়ে দেশে ফিরে আসেন বিতর্কিত এ রাজনীতিক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন