শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

সিলেটে মাজার জেয়ারতে সাবেক সেই প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ!

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০২২, ১০:৩৩ পিএম

দাম্ভিকতায় গলা ফাটিয়েছেন তিনি। বেফাঁস অশালীন বক্তব্যে আলোচিত সমালোচিত হয়েছেন তিনি। অবশেষ ক্ষমতার অহংকার অহমিকার চূড়া থেকে সোজা নেমে আসেন মাটিতে। সেই মাটিও সংকুচিত হয়ে পড়ে সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ হাসানের। ঘর সংসার চলে যায় তার বিরুদ্ধে। বিদেশের দরজাও বন্ধ হয়ে যায় তার। লোকচুক্ষুর আড়ালে চলে যাওয়া সাবেক এই তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এমপি আজ রাতে সিলেট সফরে এসেছেন। সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপির সঙ্গে একই ফ্লাইটে সিলেট এসেছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৮টায় বিমানযোগে ডা. মুরাদ ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। সিলেটে আসার পর থেকে একরকম চুপচাপ আছেন তিনি, এমনটিই সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। শাহাজালাল রাহ. এর মাজার জিয়ারতের উদ্দেশে সিলেট এসেছেন তিনি। সিলেটে ডা. মুরাদ সার্কিট হাউসে অবস্থান করবেন।

ডা. মুরাদ হাসান বাংলাদেশের একজন আলোচিত-সমালোচিত রাজনীতিবিদ এবং সদ্য সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। গত ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। এর আগে বেশ কিছু দিন ধরে বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য এবং কর্মকান্ডের কারণে সংবাদের শিরোনাম হন মুরাদ। এক ভার্চুয়াল টকশোতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন মন্তব্যের পর এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে মুরাদের অশালীন বক্তব্যের অডিও ফাঁস হয়। দাবি করা হয়- এই কথোপকথনটি ডা. মুরাদ হাসান ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির। ফোনালাপে থাকা চিত্রনায়ক ইমন পরে সেটি স্বীকার করেন। ওই কথোপকথনে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মাহিকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সহায়তায় তুলে আনার হুমকি দেন। পুরো বক্তব্যে ‘অশ্রাব্য’ কিছু শব্দ উচ্চারিত হয়েছে। বিষয়টি তখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হয়। পরে দেশজুড়ে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকার। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে না পারলেও সারা দেশে দলের নেতাকর্মীরা তার ওপর বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ হন। এ ঘটনায় বিএনপিসহ বিভিন্ন নারী সংগঠনও তীব্র প্রতিবাদ জানায়। এসব সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ডা. মুরাদের পদত্যাগ দাবি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ৭ ডিসেম্বর পদত্যাগ করেন মুরাদ। পরে আওয়ামী লীগের পদও হারান তিনি। অবশ্য তার সংসদ সদস্য পদ টিকে আছে।

এরপর ৯ ডিসেম্বর রাতে তিনি কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ইকে ৮৫৮৫-এ তিনি প্রথমে দুবাই যান। এরপর সেখান থেকে আরেকটি ফ্লাইটে কানাডার উদ্দেশে যাত্রা করেন। তবে টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরিয়ে দেয় কানাডীয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকার কারণেই মুরাদকে কানাডার ইমিগ্রেশন ফিরিয়ে দেয়। মুরাদ হাসান এরপর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঢোকার চেষ্টা করেন। তবে ভিসা না থাকায় দুবাইয়ে ইমিগ্রেশনও আটকে দেয় সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীকে। দুবাইয়ে প্রবেশে ব্যর্থ হওয়ার পর ১২ ডিসেম্বর ঢাকা ফিরে আসেন মুরাদ হাসান সর্বশেষ সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান। রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় ৬ জানুয়ারী সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে দায়ের হওয়া জিডিতে মুরাদের বিরুদ্ধে মারধর ও হত্যার হুমকির অভিযোগ আনেন তার স্ত্রী। মুরাদের স্ত্রীর কল পেয়ে বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। তারা ডা. মুরাদ হাসানকে তখন বাসায় পায়নি। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মুরাদ হাসানের স্ত্রী জাহানারা এহসানের সঙ্গে কথা বলে। তারা অভিযোগ শোনেন এবং ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে থানায় জিডি করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যার কিছু আগে জাহানারা এহসান পুলিশের গাড়ির সঙ্গে পৃথক গাড়িতে ধানমন্ডি থানায় পৌছে লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগ করেন, ‘বিবাদী ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে ১৯ বছর আগে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। বিবাহিত জীবনে আমাদের সংসারে মেয়ে রামিসা ফারিহা রাজকন্যা ও ছেলে হাসান আবরার মাহির যুবরাজ রয়েছে। বিবাদী আমার স্বামী। ‘তিনি একজন সংসদ সদস্য এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী। তিনি কারণে-অকারণে আমাকে এবং সন্তানদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছেন। হত্যার হুমকিও দিয়ে আসছেন।’

মুরাদের স্ত্রী জিডিতে উল্লেখ করেন, ‘আজ ৬ জানুয়ারি আনুমানিক বেলা পৌনে ৩টার দিকে বরাবরের মতোই তিনি আমাকে ও আমার সন্তানদের গালিগালাজ করেন এবং মারধর করতে উদ্যত হলে আমি ৯৯৯ নম্বরে কল করি। ধানমন্ডি থানা পুলিশ বাসার ঠিকানায় পৌঁছালে বিবাদী বাসা থেকে বের হয়ে যান। এ অবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি। বিবাদী যেকোনো সময় আমার ও আমার সন্তানদের ক্ষতি করতে পারেন।’ অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে নথিভুক্ত হওয়ার পর থানা থেকে চলে যান মুরাদের স্ত্রী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Abdullah ২৮ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:৫৭ এএম says : 0
কয়লা ধুলে ময়লা যায়না
Total Reply(0)
Abdullah ২৮ জানুয়ারি, ২০২২, ৬:৫৭ এএম says : 0
কয়লা ধুলে ময়লা যায়না
Total Reply(0)
Harunur Rashid ২৮ জানুয়ারি, ২০২২, ১০:২২ এএম says : 0
People of Sylhet does not want this kind of item in their city or town.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন