নাজিরপুর (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা
নাজিরপুর উপজেলার শাখারীকাঠী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের স্থগিত হওয়া কেন্দ্রে আগামী ৩১ অক্টোবর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে সরকার দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলীয় প্রভাব বিস্তার, আচারণবিধি লংঘন, প্রতিপক্ষ প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হুমকি, পুলিশি হয়রানি ও গ্রেফতারের প্রতিবাদসহ সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে নাজিরপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান খান, দপ্তর সম্পাদক সরদার সাফায়েত হোসেন শাহীন, শাখারীকাঠী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম লিটন, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব হাফিজুর রহমান লায়েক উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শাখারীকাঠী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. জাকির হোসেন খান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এ বছরের ২২ মার্চ প্রথম ধাপে শাখারীকাঠী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ শেষে ৮টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষিত হলেও ওই দিন চালিতাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা শেষে প্রশাসনের লোকজন ব্যালটবাক্স নিয়ে ফেরার পথে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গাউস ও আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সজলের ক্যাডার বাহিনী ব্যালটবাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে এবং পলাশডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালটবাক্স ছিনতাই করে। এ সময় প্রশাসনের লোকজনের সাথে তাদের ক্যাডার বাহিনীর গুলিবিনিময় হয়। তখন নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত প্রশাসনের কয়েকটি গাড়ী ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে তারা। এ ঘটনায় খালিদ হোসেন সজল ও তার ভাই নয়নকে প্রধান আসামী করে প্রশাসন দুইটি মামলা দায়ের করে এবং নির্বাচন কমিশন পলাশডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ফলাফল স্থগিত করেন। কিন্তু স্থগিত হওয়া ২নং ওয়ার্ডে বিএনপির ভোটার প্রায় ৭০ ভাগ এবং সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি প্রার্থী জয়লাভ করবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন। তার বিজয় নিশ্চিত জেনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী খালিদ হোসেন সজল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে নৌকা প্রতীকের দলীয় প্রার্থী আকতারুজ্জামান গাউসের পক্ষে বহিরাগত ক্যাডার বাহিনী নিয়ে বিএনপি সমর্থিত ভোটারদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়-ভীতি দিয়ে আসছে। এ ছাড়া নৌকা প্রতীকে ভোট না দিলে নির্বাচনী সহিংসতায় দায়ের হওয়া ওই মামলায় জড়িয়ে দেয়ারও হুমকি দিচ্ছেন এবং বিএনপি’র কোন এজেন্ট কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হবে না, টেবিলে ভোট নেয়া হবে এ সব কথা বলে ভোটারদের আতংকিত করছেন। এছাড়া গত ২৮ অক্টোবর পলাশডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিকেল ৪টায় নির্বাচনী আচারণ বিধি লংঘন করে পলাশডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আকতারুজ্জামান গাউসের এক নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী চিলতমারী উপজেলা থেকে বহিরাগত লোক এনে প্রায় এক-দেড় হাজার লোকের জমায়েত করা হয়। ওই জনসভায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা বিশাল গাড়ী বহর ও মোটরসাইকেল শোডাউন নিয়ে অংশগ্রহণ করে। জনসভায় বক্তরা নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখেন। এমনকি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী না হলে প্রশাসনের কর্তকর্তাদের সমস্যা হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়। ইতোমধ্যে নাজিরপুর থানা পুলিশ বিএনপি সমর্থিত দুইজন কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। ভোট গ্রহণের দিন কেন্দ্রে র্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানানো হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন