বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর চলনবিল অঞ্চলে ব্রি-২৯, ব্রি-৮১, ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, ব্রি-৮৬সহ বিভিন্ন জাতের বোরো ধান রোপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে ৩৫ হাজার ৮শ’ ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা র্নিধারণ করা হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৩৬ হাজার ৬শ’ ৩৬ হেক্টর জমিতে। পুকুর খনন ও ইটভাটার কারণে গত এক বছরে বোরো আবাদের জমি কমেছে প্রায় ১হাজার হেক্টর।
সরেজমিনে চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া, ইটালী ও চৌগ্রাম ও শেরকোল ইউপির কয়েকটি মাঠে দেখা যায়, স্থানীয় শ্রমিকদের পাশাপাশি বহিরাগত শ্রমিকরা বোরো চাষের জমি প্রস্তুতের পাশাপাশি বীজতলা থেকে চারা তোলা, হাল-চাষ, সার প্রয়োগসহ পানি সেচ কাজের জোগান দিতে কৃষকদের ব্যস্ততার শেষ নেই। কর্মব্যস্ত কৃষক ও শ্রমিকরা মাঠেই খাচ্ছেন দুপরের খাবার।
স্থানীয় কৃষি অফিস জানায়, এই অঞ্চলে জিরাশাইন যা স্থানীয় ভাবে মিনিকেট নামে পরিচিত। তবে মিনিকেট নামে কোন ধান নেই। এছাড়া সম্পাকাটারী, ধানের চাষও করেন কৃষকরা। কৃষকরা বলছেন তেল, সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর গত বারের চেয়ে তাদের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের আয়েশ গ্রামের কৃষক আব্দুল জোব্বার ও মতিন ফকির জানান, তেল ও সারের দাম বাড়ার পাশাপাশি শ্রমিকদেও মজুরীও বেড়েছে। কৃষিবান্ধব এই সরকারের কাছে ধানের ন্যায্য দাবি করেন তারা। ইটালী ইউনিয়নের সাতপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক রইচ উদ্দিন বলেন, আমার ৩০বিঘা জমির মধ্যে ১৮বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী ১সপ্তাহে সব জমির ধান রোপণের কাজ শেষ হবে।
ডাহিয়া ইউনিয়নের বর্গাচাষি আব্দুল খালেক বলেন, আমি জমি লীজ নিয়ে বোরো ধানের চাষ করি। প্রতিবিঘা (৩৩শতাংশ) জমি লীজ বাবদ দিতে হয়, ৮ হাজার টাকা এবং চাষাবাদ খরচ হয় আরও ৮হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘা জমিতে ২৫মণ থেকে ২৬ মণ হয়। শ্রমিকদের ধান কাটা মাড়াই খরচ বাদে ১৮থেকে ২০মণ ধান ঘরে ওঠে। যার কারনে প্রতি বছর বর্গাচাষিরা লোকসানের মুখে পড়েন। তাই তিনি সরকারের কাছে তেল-সার এবং কীটনাশকসহ কৃষি কাজে ব্যবহৃত সকল পণ্যর দাম সীমিত রাখার দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা বলেন, চলতি মৌসুমে ৩৫ হাজার ৮শ’ ৬০হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা র্নিধারণ বোরো করা হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৩৬ হাজার ৬শ’ ৩৬ হেক্টর। পুকুর খনন ও ইটভাটাসহ বিভিন্ন কারণে গত বছরের চেয়ে বোরো আবাদের জমি কমেছে। চলতি বোরো মৌসুমে ইতোমধ্যে ৪০ ভাগ জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণের কাজ শেষ হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন