পঞ্চগড়ে ঝুঁকিপূর্ণ এবং অবৈধ অটোরিকশায় ভরে গেছে জেলার সড়ক ও অলিগলি। দ্রুতগতির এ যন্ত্রদানব এখন রাস্তায় পথচারী মানুষের কাছে আতঙ্কের অপর নাম। পৌরসভা ও ট্রাফিক পুলিশের খামখেয়ালিতে অবৈধ অটোরিকশা প্রতিটি সড়ককে করে তুলেছে ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে প্যাডেল রিকশায় শুধু একটি মোটর লাগিয়ে রাস্তায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এতে হালকা ধরনের ব্রেকে কোনোভাবেই ওই সব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না চালকরা। আর পা দিয়ে প্যাডেল না করার কারণে আনকোড়া চালকরা ইচ্ছামতো গতি বাড়িয়ে চলাচল করায় হঠাৎ ব্রেক কষতে গিয়ে বিপত্তি ঘটছে।
পৌর কর্তৃপক্ষ শহরে চলাচলের জন্য প্রতিবছর ইজিবাইক (অটো) এবং ব্যাটারিচালিত ভ্যান ইজারা দেয়া হয়। আর ইজারাদারের পক্ষে দেয়া হয় নম্বরসহ লাইসেন্স, ব্যাটারিচালিত ভ্যান থেকে বছরে নেয়া হয় ৭০০ টাকা, এদিকে ইজিবাইক থেকে প্রতিদিন শহরে প্রবেশ করলেই দিতে হয় ১০ টাকা, শহরের পাঁচটি পয়েন্ট থেকে আদায় করা হচ্ছে।
ইজারাদারের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ২০০ ইজিবাইক জেলা শহরের পাঁচটি রুটে চলাচল করছে। শহর ছাড়াও আশপাশের গ্রামাঞ্চলে এবং বিভিন্ন উপজেলায় ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান হাজার হাজার এ ধরনের অবৈধ যন্ত্রদানব চলাচল করছে। কয়েক বছর ধরে এ যান চলাচল করলেও বিআরটিএ তাদের কোনো লাইসেন্স দেন না। যার কারণে এ যানটিকে কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি অবৈধ বলছে।
সরজমিনে দেখা যায়, শহরের বিভিন্ন সড়কে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকার কারণে বাড়ছে যানজট হচ্ছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। এদিকে শারিরীক কোন পরিশ্রম না থাকায় ১৩ বছরের কিশোর থেকে ৮০ বছরের বৃদ্ধ পর্যন্ত চালাচ্ছে এসব অবৈধ যান।
মোটরসাইকেল চালক শান্ত জানান, গাড়ি নিয়ে সড়কে বের হলেই সবসময় আতঙ্কে থাকতে হয়। কখন কোন অটোরিকশা-ইজিবাইক সামনে-পেছনে না দেখে ঘুরিয়ে নেয়।
বাস চালক শাহিনুর জানান, অটোরিকশা-ইজিবাইক চালানোর কোন দক্ষ অদক্ষ নাই, কিছু টাকা থাকলেই যে কেউ কিনে বেরিয়ে পড়ে সড়কে। এদের নিয়ন্ত্রণ করারও কোন ব্যবস্থা নেই কারো পক্ষে।
তবে একাধিক ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত ভ্যান চালক জানান, ‘অবৈধ হলেও আমাদের জন্য অনেক উপকারে আসছে। আমরা বাজারে পাচ্ছি তাই ক্রয় করছি। কোনটা চালানো যাবে কোনটা যাবেনা তা আমরা জানিনা। আয়ের একটা উৎস হলেই হয়।’
পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও মোটরযান) পঞ্চগড়, মির্জা কামরুল ইসলাম জানান, অবৈধ এসব গাড়ি আমদানি বন্ধ হলেও আগেই অনেক বেশি পরিমাণ গাড়ি সড়কে নেমে গেছে। যার কারণে এসব সহজেই তাড়ানো যাচ্ছে না। তিনি জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা এলে জোরালো পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হবে।
মেয়র জাকিয়া খাতুন জানান, ‘অটোরিকশা অবৈধ কি-না সেটা বলতে পারবো না। তবে শহরে যানজট নিরসনে প্রয়োজন, তাদের দাঁড়ানোর জায়গা আমরা সেটা চেষ্টা করছি।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন