শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ডাক্তার সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত দালালদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ রোগীরা

ইসলামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইসলামপুর (জামালপুর) উপজেলা সংবাদদাতা

জামালপুরের ইসলামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। ডাক্তার সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি কর্মকর্তা, কর্মচারী, নার্স, স্টাফ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ ওষুধসামগ্রীর অভাবে স্বাস্থ্যসেবা বিঘিœত হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, ইমার্জেন্সিতে চারজন ডাক্তার নিয়মিত থাকলেও ১৫জন কনসালটেন্টের মধ্যে আছেন ২ জন। ১১ জন ডাক্তার নিয়মিত ডিউটি করার কথা থাকলেও ডা. আরিফুল ইসলাম, ডা. ফারজানা প্রেষণে আছেন। অথচ তারা ইসলামপুরের জনগণের বেতন তারা ভোগ করছেন। মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন দুইজন, বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে আছেন দুইজন। বর্তমানে ৫ জন কর্মরত আছেন, তাদের দিয়েই কোনোমতে চলছে উপজেলার জনগণের স্বাস্থ্যসেবা। নার্স সংকটেও ভর্তি রোগীরা কাক্সিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত। প্রত্যন্ত এ অঞ্চল ১২টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা নিয়ে ইসলামপুর উপজেলা। যমুনা ব্রহ্মপুত্র নদীবেষ্টিত এ উপজেলার ৪ লাখ লোকের বসবাস। নি¤œবৃত্ত এ অঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর দিন চলে অর্ধাহারে অনাহারে। উপজেলার যমুনার পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ৪০টি গ্রাম আরেকটি উপজেলার মতো যেমন কুলকান্দি ইউপির জিগাতলা, বেড়কুশা, হরিণধরা, চর হরিণধরা, চর কুলকান্দি, বেলগাছার মন্নিয়া, বরুল, সিন্দুরতলী, প্রজাপতি, চরমন্নিয়া, শিলদহ, সাপধরী সম্পূর্ণ ইউনিয়ন চিনাডুলী ইউনিয়নের চর নন্দনেরপাড়া, বীর নন্দনেরপাড়া ও নোয়ারপাড়া ইউনিয়ন এবং পূর্বাঞ্চলের গাইবান্ধা, গোয়ালেরচর, চর গোয়ালীনি, চরপুঁটিমারী ইউনিয়নের জনগণ স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন দিক থেকেই বঞ্চিত। এসব এলাকার মানুষগুলো স্কুল ও কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকে তারা খুব বেশি বঞ্চিত। তারপরেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো সময়ের প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইসলামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা নিতে এসে হয়রানি, সময় অপচয়সহ নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীনসহ রোগের প্রতিকার না পেয়েই নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। সিডিউল টাইম মাফিক ডাক্তারদের না থাকারও অভিযোগ রয়েছে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের। অফিস টাইম সকাল-৯টা হতে ২টা ৩০ পর্যন্ত থাকলেও ডাক্তাররা ১১টায় অফিসে এসে আবার ১২টার মধ্যেই চলে যাওয়ার কথাও জানা যায়। অন্যদিকে দালালদের খপ্পরে পরে অতিষ্ঠ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। ওঁত পেতে থাকা দালালরা সাধারণ রোগীদের হাসপাতাল গেইটে প্রবেশ করা মাত্রই সেবার নামে ডেকে নিয়ে অন্যান্য সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ঠিকমত চিকিৎসা না পেয়ে পকেট খালি করে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে বাড়ি ফেরেন। এ যেন দেখার কেউ নেই। সুধী, সুশীল সমাজ ও সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা নিতে এসে নিশ্চিত স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার যাতে না হতে হয় এব্যাপারে ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শহিদুর রহমান বলেন, হাসপাতালের সমস্যাগুলোর বিপরীতে কোনো প্রতিকার না হওয়ায় চিকিৎসাসেবা বিঘিœত হচ্ছে। আমরাও খুব কষ্টে আছি। ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো জানিয়েছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন