অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দেশের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্টের প্রধান কার্যালয় চুয়াডাঙ্গার মোমিনপুরে তালা দিয়েছেন প্রতারিত গ্রাহকরা। আদিয়ান মার্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবায়ের সিদ্দিকীর বাড়িতেও তালা দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা অর্ধশত প্রতারিত গ্রাহক আদিয়ান মার্টের প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। এর আগে প্রতিষ্ঠানটির সামনে মানববন্ধন করেন তারা। এসময় তারা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারি গ্রামের মজিবুল হক নামে এক গ্রাহক জানান, গত ১ বছর আগে আদিয়ান মার্টকে মোটরসাইকেল কেনার জন্য ৩ লাখ ২৬ হাজার টাকা দেন তিনি। তিনি এখনও পণ্য পাননি। তাকে টাকাও ফেরত দেয়া হয়নি। আতিকুর রহমান উজ্জল নামে আরেক গ্রাহক জানান, তার কাছ থেকে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর আদিয়ান মার্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবায়ের সিদ্দিকী, তার বাবা আবু বকর সিদ্দিক, ভাই মাহমুদ সিদ্দিক ও ম্যানেজার মিনাররুল ইসলামকে আসামি করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন তিনি। পরে তাদেরকে গ্রেফতার করে র্যাব। তিনি আরও জানান, আদালত থেকে জামিনে আসার পর থেকে আদিয়ান মার্ট পাওনা টাকা ফেরত দিতে নতুন করে টালবাহানা শুরু করেছে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। তাই তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে তালা দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ।
উল্লেখ্য, লোভনীয় অফারে বিভিন্ন ধরনের পণ্যের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্ট। সদর উপজেলার আতিকুর রহমান উজ্জল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর জুবায়ের সিদ্দিকী, তার বাবা আবু বকর সিদ্দিক, ভাই মাহমুদ সিদ্দিক ও ম্যানেজার মিনারুল ইসলামকে আসামি করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা করেন ওই গ্রাহক। ওই রাতে খুলনা ও চুয়াডাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে র্যাব। সম্প্রতি উচ্চ আদালত থেকে সিইও জুবায়ের সিদ্দিক বাদে মামলার অন্য আসামিরা জামিন পান। জামিনের পরও পাওনা টাকা না পেয়েও আন্দোলন শুরু করেছেন গ্রাহকরা।
প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতসহ বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১৮শ’র মতো এনভয়েস অর্ডার বাকি আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন