লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের পশ্চিম গন্ধর্বপুর গ্রামের বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন-বিএডিসির ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন ‘দুই কিউসেক ইসমাইল এলএলপি স্কিম’টিতে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগের জেরে পানি উত্তোলন বন্ধ থাকায় প্রায় ২৬ একর জমিতে বোরো চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দু’পক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তিন দিনের মধ্যে দুই ধরনের নির্দেশনা দেওয়ায় এই শঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত ২০ জানুয়ারি একটি চিঠিতে ইউএনও পাম্প চালুর অনুমতি দিলেও ২৩ জানুয়ারি আরেক চিঠিতে তা বন্ধ রাখতে বলেন তিনি।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কৃষকরা জানান, এই সেচ প্রকল্পটির ব্যবস্থাপক ইসমাইল হোসেন গত ১২ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সম্প্রতি মো. মহিউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি ইসমাইলের বিরুদ্ধে ইউএনওর কাছে অভিযোগ করেন। মহিউদ্দিন ইউএনও বরাবর দেয়া লিখিত অভিযোগে বলেন, ইসমাইল দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেন, নির্ধারিত টাকার চেয়ে বেশি টাকা নেন এবং কৃষকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। অভিযোগকারী মহিউদ্দিন বলেন, ‘ম্যানেজার ইসমাইল ঠিকমতো পানি দিত না। সে নিয়মের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করত এবং কৃষকদের সাথে খারাপ আচরণ করত। তাই কৃষকদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি অভিযোগ করেছি।’
অপরদিকে, পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইসমাইল হোসেন ও প্রকল্প সভাপতি হারাধন চন্দ্র মজুমদার। তাদের অভিযোগ, এই প্রকল্পের দায়িত্ব থেকে ইসমাইলকে সরানোর জন্য মহিউদ্দিন পরিকল্পিত এই অভিযোগ দিয়েছেন। প্রকল্প ব্যবস্থাপক ইসমাইল হোসেন জানান, ‘ইউএনও মহোদয় আমাকে ২০ জানুয়ারি স্কিম চালু করার চিঠি দেন। আমি সবকিছু ঠিকঠাক করে পাম্প চালু করতে গেলে মহিউদ্দিন বাধা দেয়। পরে ইউএনও মহোদয় আরেকটি চিঠি দেন পাম্প চালু না করার জন্য।’ মান্দারি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সহিদ জানান, এই দুটি অভিযোগ উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেন ইউএনও। তদন্ত শেষে গত ১৯ জানুয়ারি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসান ইমাম তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মামুন জানান, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সেচ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রকল্প ম্যানেজার ইসমাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় সে সেচ পাম্প চালু করতে পারছে না, তদন্তে ইসমাইলের তেমন কোনো দোষ পাওয়া যায়নি।’
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান ইমাম বলেন, ‘প্রকল্পটি বিএডিসির। এতে আমাদের সম্পৃক্ততা নেই। তবে সেখানের অভিযোগগুলো আমরা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছি। বিষয়টি সমাধান হলে কৃষকরা চাষাবাদ শুরু করতে পারবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন জানান, ‘ইসমাইলের আবেদনের ভিত্তিতে তাকে সেচ পাম্প চালানোর নির্দেশনা দিয়েছি। কিন্তু আরেকটি অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে পাম্প বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিই। ২/১ দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন