ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাউতাইল গ্রামে গতকাল মঙ্গলবার দুই সন্তানের জননী রুমা খাতুন (২০) নামে এক গৃহবধূকে প্রথমে চুল কেটে নির্যাতন ও পরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে স্বামী ও তার পরিবার। এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী ও শাশুড়িসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রামবাসী জানায়, ৭ বছর আগে সদর উপজেলার ধোপাবিলা গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে রুমা খাতুনের সাথে বিয়ে হয় রাউতাইল গ্রামের মোজাম হোসেনের ছেলে ফিরোজ হোসেনের সাথে। বড় স্ত্রী নজমা বেগমের কোনো সন্তান না হওয়ায় রুমাকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন ফিরোজ। এরপর রুমার কোল জুড়ে আসে দুটি কন্যা সন্তান। নির্যাতিত রুমার বোন রিনা খাতুন জানান, প্রথম স্ত্রীর সন্তান না হওয়ায় ফুসলিয়ে ৮ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় রুমাকে বিয়ে করেন ফিরোজ হোসেন। বিয়ের পর থেকে শুরু হয় তার উপর নির্যাতন। সন্তান দুটি মায়ের কাছে না দিয়ে ঝিঁয়ের মতো ব্যবহার শুরু করেন সতিন নাজমা খাতুন। শাশুড়ি মনোয়ারা খাতুন, ফুফু শাশুড়ি উষা খাতুন ও স্বামী ফিরোজ হোসেন বিভিন্ন সময় নির্যাতন করত। গতকাল মঙ্গলবার সকালে শাশুড়ি মনোয়ারা খাতুন, সতীন নাজমা খাতুন, স্বামী ফিরোজ হোসেন রুমাকে ঘরে আটকিয়ে বেধড়ক মারপিট শুরু করতে থাকে। এক পর্যায়ে তার চুল কেটে দেয়া হয়। এতেও খায়েশ মেটেনি তাদের। হত্যার উদ্দেশ্যে রুমার সারা গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা করে রুমা খাতুন জীবন বাঁচাতে পালিয়ে ঝিনাইদহ শহরের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রুবিনা পারভীন জানান, রুমার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ও সিগারেটের আগুনের স্যাকা পাওয়া গেছে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার জানান, গৃহবধূ নির্যাতনের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন