বরিশাল নগরীতে দাম্পত্য কলহের জেরে তালাকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। বিবাহ এবং তালাক রেজিস্ট্রি করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা মানছেন না অনেকেইে। এখানকার নিন্ম আয়ের অধিকাংশ মানুষ বিনা রেজিষ্ট্রেশনে যেমন বিয়ে করছেন তেমন বিচ্ছেদও ঘটাচ্ছেন একই কায়দায়। এমনকি তালাকের পর সিটি কর্পোরেশনের সালিশী নোটিশেও তেমন সাড়া মিলছে না।
বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন মতে তালাক অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে এবং তালাকের পর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় হলে সালিশী বোর্ডে অবশ্যই নোটিশের এক কপি পাঠাতে হবে। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশন সালিশী শাখা বিবাহ বিচ্ছেদ বা তালাকের ঘটনা সমাধানের জন্য উভয়পক্ষকে নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশে পক্ষগণ তেমন সাড়া না দেয়ায় দাম্পত্যজীবন বজায় রাখার জন্য সিটি কর্পোরেশনের ভূমিকা খুব একটা কাজে আসছে না।
এক হিসেবে জানা গেছে, ২০২০ সালে বরিশাল মহানগরীতে ২০৫টি তালাকের নোটিশ পৌছে নগর ভবনে। আর পরবর্তি বছরে এ সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৪৪টি। কিন্তু শতকরা ১০ ভাগ ক্ষেত্রেও দাম্পত্য জীবন পূণঃস্থাপনে নগর ভবনের পদক্ষেপ কাজে আসেনি। আইন অনুযায়ী নগর ভবন এসব তালাক নোটিশের অনুলিপি পাবার পরে বিচ্ছেদের নোটিশদাতাসহ স্বামী-স্ত্রী উভয়কেই সমঝোতার চিঠি দেন। ৯০ দিনের মধ্যে এ ধরনের সমঝোতা হলে তারা পুনরায় দম্পত্য জীবন শুরু করতে পারেন। কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই নোটিশ পেয়ে বিচ্ছেদকৃতরা নগর ভবনের সংশ্লিষ্ট শাখায় হাজির হচ্ছেন না। ফলে ৯০ দিন পরে স্বাভাবিকভাবেই বিবাহ বিচ্ছেদ কার্যকর হয়ে যাচ্ছে। নগর ভবন সূত্র মতে, নোটিশের অনুলিপি পেয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বামীÑস্ত্রী উভয়কেই আমন্ত্রণ জানানো হলেও অর্ধেকেরও বেশীরভাগ তাতে সাড়া দেন না। গত বছর ২৪৪টি তালাক নোটিশের মধ্যে ১০টি ক্ষেত্রেও সমঝোতা সম্ভব হয়নি। জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সমঝোতা হয়েছে মাত্র ৪টি। আগের বছরের চিত্রও প্রায় একই। অথচ প্রতিবছরই তালাকের সংখ্যা ২০-২৫% পর্যন্ত বাড়ছে।
বরিশাল সিটি করপোশেনের প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে এ ব্যাপারে আলাপ করা হলে তারা উভয়ই আইন অনুযায়ী প্রতিটি তালাকের বিষয়ে সমঝোতার চেষ্টার কথা জানান। কিন্তু ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই কোন সমাধান বা সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি বলে হাতাশা ব্যক্ত করেন তারা। এ ক্ষেত্রে আইন আরো কঠোর করারও তাগিদ দিয়েছেন কয়েকজন আইনজীবী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন