সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

শখের বশে সুখের বাগান

প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা

ছাদের যেদিকে চোখ যায় শুধু গাছ আর গাছ। ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে ছাদের সাজানো বাগান। ছাদের পাশাপাশি বাড়ির চারপাশের বেলকোনেও ঝুলছে ঝুলন লতা। ফুটেছে নানান রঙের ফুল। নওগাঁ সদর উপজেলার পার-নওগাঁয় শহিদ, তার পুরো বাড়িটিকে গাছের বাগান রূপে সাজিয়েছেন। ছোট বেলা থেকেই বাগান করার শখ ছিল তার। কিন্তু সময়ের অপ্রতুল্যতায় সেই বাগান করা হয়নি তার। এখন সে ব্যবসায়ী। কাজ করছেন কৃষি ও পরিবেশ উন্নয়ন নিয়ে। তার সেই শখকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে শুরু করেন গাছের সংগ্রহ। শখের বসে দু’একটি করে গাছ সংগ্রহ করতে করতে এখন সেটি হয়েছে বিশাল এক সংগ্রহ শালা। শখের সেই বাগানটি এখন বিশাল মহিরূপে আকার ধারণ করেছে। অবসরে তার ছাদের বাগানে এসে দু’দ- দাঁড়ালে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। গাছের স্থায়ীত্বের কথা চিন্তা করে রড সিমেন্টের মিশ্রণে শহিদ তৈরি করেছেন বিশেষ এক ধরনের ফার্ন বা টব। যাতে করে গাছগুলো বড় হওয়ার প্রাক্কালে শিকড়গুলো ছাদের কোনো ক্ষতি না করে টবের বাড়তি অংশে ছড়িয়ে যেতে পারে। এতকিছুর অন্তরালে প্রতিটি গাছ বেড়ে উঠেছে আপন মনে। সারি সারি করে টবে রাখা গাছগুলো যে কারো নজর কাঁড়তে সক্ষম হয়েছে। শতাধিকেরও বেশি দেশি-বিদেশি জাতের ফল, ফুল, শোভাবর্ধন গাছসহ রয়েছে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির সমারোহ। রয়েছে বিলুপ্ত প্রায় ও দুর্লভ প্রজাতির গাছগুলো। দেখা মিলবে চির হরিৎ ও গুল্ম বৃক্ষেরও। রয়েছে হরেক রকমের দেশি-বিদেশি সিজনারি ফুল। তার বাগানে যে সমস্ত গাছ আছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে থাই আম, থাই চেরী, থাই জা¤ু^রা, ছবেদা, ডালিম, চায়নিস কমলা, থাই কট লেবু, দেশি লেবু, উন্নত জাতের কদবেল, উন্নত জাতের থাই পেয়ারা, অ্যাবোক্যাডো, লংগিয়ান, আশফল, থাই জলপাই, থাই কামরাঙ্গা, করমচা, ক্যান্ডার, আমড়া, হরিফল, ছফেদা, পিসফল, আলুবোখারা, জামরুলসহ বেশকিছু ফলের গাছ। রয়েছে ব্রায়া, জিমিয়া পাম্প অলস্পাইস, বিলিংহার্ড, বাগান বিলাস, অ্যালোভেরা, চায়নিস বাম্বু, ড্রেসিনা ফরচুন, ট্রপিক স্নো, তুলসী ও বেশ কয়েক প্রজাতির ফুলের গাছ। টগর, বেলী থায়কার্ট গোলাপ, টিউলিপ ইত্যাদি অন্যতম। তাছাড়া বেলকোনে ঝুলছে নানান প্রজাতির অর্কিড গাছ। ফুটেছে নানান ফুল। বাগানের ফল গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করেছে। বেশকিছু গাছে ধরে আছে তাজা ফল। যে ফলগুলোতে কীটনাশকের কোনো রেশ নেই। রাসায়নিকমুক্ত এই ফলগুলো খেতে ভীষণ মজা। শহিদকে ছাদের বাগান করার উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন সবুজ আলো কৃষি উন্নয়ন ও গবেষণা কেন্দ্র বগুড়া-এর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। বিভিন্ন প্রজাতির গাছের সরবরাহ ও সহযোগিতায় তার ছাদের বাগান একটি মডেল হিসেবে পরিণত হচ্ছে। শহিদের সাথে কথা হয় ছাদের বাগান গঠন সম্পর্কে। তিনি জানান, আমরা বাড়ির ছাদে, সরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় এবং বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানা জায়গায় বাগান তৈরি করে দিয়ে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছি এবং চাহিদা অনুযায়ী সবুজ আলোর নার্সারি দেশের সকল প্রান্তে বাগান নির্মাণে সকলকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য একটাই, প্রতিটি জায়গায় হোক গাছের আবাস ভূমি। প্রতিটি গাছই হোক মানুষের বেঁচে থাকার হাতিয়ার। দৃষ্টিনন্দন এই বাগান তৈরি করা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে শহিদ জানান, অধিক জনসংখ্যার এই দেশে অপরিকল্পিতভাবে যেখানে- সেখানে বিল্ডিং নির্মাণের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে বাগান করার উপযুক্ত জায়গা। বাড়ির ছাদে সবুজ বাগান গড়ে তুলতে তাই আমাদের এই প্রয়াস। শুধু তিনি একা নয় বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী ও দেশের সচেতন নাগরিকদের বাড়ির ছাদে বাগান করতে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন শহিদ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন