দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) উপজেলা সংবাদদাতা
দামুড়হুদার দর্শনায় অংকুর আদর্শ বিদ্যালয়ে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় অর্ধশতাধিক কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যালয়ে তিন দিনের ক্লাস ছুটির ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার স্কুলে ক্লাস চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। শিক্ষার্থী ও উপস্থিত অভিভাবকরা জানান, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার দর্শনা অংকুর আদর্শ বিদ্যালয়ে প্রতিদিনের ন্যায় মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছিল। এসময় হঠাৎ করে বিদ্যালয়ের কেজি-টু ও কেজি-ফোর শ্রেণির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সারা শরীর চুলকাতে চুলকাতে লালবর্ণ ধারণ করে ও আক্রান্ত স্থান ফুলে ওঠে। সেইসাথে শরীরের তাপমাত্রা কমে গিয়ে গা-হাত-পা ঠা-া হয়ে যায়। কয়েক মিনেটের মধ্যে একইভাবে কেজি-থ্রি’র লাবিব, মেঘা, শিলু, কেজি-ফোর’র নুহাশ, লাবিব, রাগিব, সিয়াম, শিহাবসহ বিভিন্ন শ্রেণির প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাথে সাথে সকল ক্লাস বন্ধ করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষের বাইরে বেরিয়ে আসে। ঘটনা জানতে পেরে বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অন্যান্য শিক্ষক ও বিদ্যালয়ে অবস্থানরত অভিভাবকদের সহায়তায় আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসা দিতে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিয়ে তাদের বাড়ি পাঠান। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা সুস্থ আছে বলে জানিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে একসাথে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী কি কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লো তাৎক্ষণিকভাবে তা নির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারেনি। এ ঘটনায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের টিনের ছাউনির নিচে চাটাইয়ের সিলিং ও পার্টিশনে দেয়া রয়েছে কাঠের বেড়া। দীর্ঘদিনের পুরাতন ঘরের দেয়ালগুলোও স্যাঁতসেঁতে। দীর্ঘদিনেও এসব চাটাই ও কাঠের বেড়া পরিষ্কার করা হয় না। সেইসাথে রোদের সময় শ্রেণিকক্ষের টিনের ছাউনি প্রচ- গরম হয়ে যায়। কক্ষের ফ্যানগুলোর অবস্থাও খুব খারাপ। মোটেও বাতাস হয় না। স্কুলে বেতন, কোচিংসহ নানারকম গলাকাটা ফি আদায় করা হলেও সেবা দেয়া হয় নিম্নমানের। বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনা জানার সাথে সাথে আমি নিজে ও শিক্ষকদের সহায়তায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিতে নিকটবর্তী দুইটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিই। সেখানে কোন ডাক্তার না পেয়ে স্থানীয় চিকিৎসক গোলাম মোস্তফার কাছে নিয়ে তাদের চিকিৎসা দিয়ে তাদের নিজ নিজ বাড়ি পাঠিয়েছি। খোঁজ নিয়ে জেনেছি বর্তমানে তারা সুস্থ আছে। এ ঘটনায় শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার ও হোয়াইটওয়াশ করার জন্য বিদ্যালয় তিন দিনের ছুটি ঘোষণা করেছি। ছুটি শেষে আগামী শনিবার থেকে যথারীতি আবার ক্লাস শুরু হবে। এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প.প. ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মেজবাউল হক জানান, হঠাৎ করে বাতাসের সাথে উড়ে আসা ফ্যাঙ্গাস জাতীয় ভাইরাস বা পার্টিকেল জাতীয় ফরেনবডি কিছু শরীরে প্রবেশ করে এমনটা হয়ে থাকতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন