গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা
গোপালগঞ্জে শিক্ষক স্বামীর নির্যাতনে বিষপান করে ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ মুক্তি বিশ্বাসের (২৮) আতœহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামী যৌতুকের জন্য ওই গৃহবধূকে নির্যাতন করত বলে ওই গৃহবধূর মা কনিকা দাস অভিযোগ করেছেন। বিষপানের পর সংকটজনক অবস্থায় ওই গৃহবধূকে গোপালগঞ্জ আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপাতালে আনলে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মুক্তি বিশ্বাসের মৃত্যুর পর লাশ হাসপাতালে ফেলে স্বামী পরেশ বিশ্বাস ও তার স্বজনরা পালিয়ে যায়। গত মঙ্গলবার গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট সড়কের গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলতলী ইউনিয়নের পদ্মবিলা নামক স্থানে মুক্তি বিষপান করে। জানা যায়, তিন বছর আগে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার নিজড়া সিকিপাড়া গ্রামের মৃত তারাপদ দাসের মেয়ে মুক্তি দাসের সাথে কাশিয়ানী উপজেলার কড়িগ্রামের নৃপেন বিশ্বাসের ছেলে পরেশ বিশ্বাসের বিয়ে হয়। ওই গৃহবধূর মা কনিকা দাস বলেন, বিয়ের পর পরেশ বিশ্বাস গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৌলতলী সাহাপুর সম্মিলনী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক পদে আমাদের টাকায় চাকরি নেন। তারপর থেকে পরেশ বিশ্বাস স্ত্রী মুক্তিকে নিয়ে বৌলতলী বাজারের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। কিছুদিন আগেও পরেশ বিশ্বাস জরুরি প্রয়োজনের কথা বলে মুক্তিকে চাপ দিয়ে আরো ৫০ হাজার টাকা যৌতুক নেয়। পরবর্তীতে পরেশ বিশ্বাস তার নামে আমাদের আলু চাষের এক বিঘা জমি লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এ বিষয় নিয়ে প্রায়ই পরেশ মুক্তিকে শারীরিক নির্যাতন করে আসছিল। অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে আমার মেয়ে প্রতিবাদ করে। গত সোমবার দিবাগত রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ব্যাপক ঝগড়াঝাটি হয়। এক পর্যায়ে মুক্তিকে গভীর রাতে ঘর থেকে বের করে দেয় তার স্বামী। মঙ্গলবার মুক্তি রাস্তায় বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষপানের পর মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে গোপালগঞ্জ আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর সে সেখানে মারা যায়। এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. সেলিম রেজা বলেছেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন