মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাল্যবিবাহ বন্ধে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও বন্ধ হচ্ছে না বাল্যবিবাহ। জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার প্রথম দিনে শতাধিক ছাত্রীর পরীক্ষায় অংশ না নেয়ার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে তাদের বাল্যবিবাহ হওয়ার খবর জানা গেছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় এ বছর উপজেলার ৫টি কেন্দ্রে মোট ৭ হাজার ২৬৭ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। মঙ্গলবার পরীক্ষার প্রথম দিনে ১৩০ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকে। সূত্র জানায়, পরীক্ষায় অংশ না নেয়া ১৩০ জনের মধ্যে প্রায় ১শ’ জনই ছাত্রী। আর এ সকল ছাত্রীর প্রায় সকলেরই বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না। গত মঙ্গলবার পরীক্ষার প্রথম দিনে মির্জাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মির্জাপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও মির্জাপুর সদয় কৃষ্ণ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে এ তথ্যের সত্যতাও পাওয়া গেছে। হাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী স্বর্ণা, হিলড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের লিজা, লতিফপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের উন্নতি সরকার, দেওহাটা এ জে উচ্চ বিদ্যালয়ের রুমি ও সুমাইয়া, মির্জাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী আফসানার বেঞ্চ ফাঁকা রয়েছে। এসব ছাত্রীদের পাশের বেঞ্চে বসাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের প্রত্যেকেরই বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না। এদিকে বাল্যবিবাহ বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সারা বছর ধরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে সচেতনমূলক সভা, জনপ্রতিনিধি ও এনজিওকর্মীদের দিয়ে প্রচারণা চালানোসহ কাজীদের বাল্য বিয়ে না পড়ানোর শপথ করালেও তা কাজে আসছে না। মির্জাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সুলতান হোসেন বলেন, তার বিদ্যালয়ে ৩৫৩ জন ছাত্রী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ৩৪৮জন। উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে আরও বেশি সচেতনমূলক ক্যাম্পেইন করা হবে। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসুম আহমেদ বাল্যবিবাহের বিষয়ে বলেন, শিক্ষক জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, অভিভাবক ও কাজীদের সম্পৃক্ত করে আরও বেশি সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। তবে কাক্সিক্ষত লক্ষে পৌঁছাতে সকল শ্রেণি, পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে আরও সচেতনমূলক কাজ করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন