দুই দশকের মধ্যে শীতকালে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত দেখেছে খুলনাবাসী। শীতকালের এই হঠাৎ বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় জমেছে হাঁটুপানি। ফলে, ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ বলেন, গতকাল শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মাত্র ২ ঘণ্টায় খুলনায় ৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তাও আবার শীতকালে। আমি ২০০০ সাল থেকে আবহাওয়া অফিসের দায়িত্বে রয়েছি, কিন্তু আমার স্মরণে শীতকালে এ ধরনের ভারি বৃষ্টিপাতের নজির নেই।
এর আগে ২০১৯ সালে একদিনে ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলেও, তা ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে হয়েছিল, তিনি বলেন।
শুক্রবার সকাল থেকেই মেঘাচ্ছন্ন ছিল খুলনার আকাশ। তবে ছিল না শীতের আমেজ। শীতকাল হলেও আবহাওয়া ছিল বেশ গরম। পরে, বেলা ১১টার পর ঠাণ্ডা বাতাসের সঙ্গে শুরু হয় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। যা বেলা ১২টার দিকে ভারি বৃষ্টিতে রূপ নেয়।
এ সময় নদীতে জোয়ারের চাপ থাকায় বৃষ্টির পানি আটকে মহানগরীর অধিকাংশ সড়ক পানিতে ডুবে যায়। কোথাও কোথাও হাঁটুপানিও জমতে দেখা গেছে। নগরীর শান্তিধাম মোড়, আহসান আহমেদ রোড, স্যার ইকবাল রোড, ডাকবাংলা, শিববাড়ী, ফেরীঘাট, শেখপাড়া, নিউমার্কেট, ময়লাপোতা, সাত রাস্তার মোড়, পিটিআই মোড়, টুটপাড়া কবরখানা মোড়, রূপসা, গল্লামারী, নিরালা, জিরোপয়েন্ট, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর, দৌলতপুর, রেলিগেট, মানিকতলা, ফুলবাড়ীগেট, শিরোমনি, ফুলতলা বাজারসহ বেশিরভাড় সড়কে পানি জমে চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে।
সোনাডাঙা এলাকার আল আমিন বলেন, “শীতকালে এ ধরনের বৃষ্টি আগে দেখিনি। দুই-তিন বছর আগেও একবার এমন বৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু সেটা গরমের শুরুতে। আর এবার মাঘ মাসেই।”
এ বিষয়ে খুলনা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। অন্যদিকে, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এরই প্রভাবে বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ও কোথাও কোথাও ভারি বৃষ্টি বা বজ্র বৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সারাদেশে মেঘলা ও কুয়াশার জন্য শীতের তীব্রতা একটু বেশি অনুভূত হচ্ছে। শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে দেশের নদীবাহিকার বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন