ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে মাঝারি বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় ফসলসহ বসতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাধাগ্রস্ত হয়েছে কৃষিকাজ। কৃষক-কৃষানীরা বিপাকে পড়েছেন। বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীবন। এর প্রভাব পড়েছে প্রাণীকূলেও।
সরেজমিনে গত শুক্রবার ও শনিবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, আগাম গমের ক্ষেত ঝড়ো বাতাসে মাটিতে নুইয়ে পড়েছে। আলু ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমেছে। মাঠে কাজ করতে দেখা যায়নি কোন শ্রমিককে। এছাড়াও সরিষা, ভূট্টাসহ সব ফসলই বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগাম ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
আরও দেখা যায়, দমকা হাওয়ায় উড়ে গেছে দরিদ্র মানুষের টিন চাতাইয়ের ঘর। সেগুলো মেরামত করছেন ক্ষতি গ্রস্থরা।
ধর্মগড় ইউনিয়নের কৃষক সোলেমান আলী জানান, এবারে ২ বিঘা জমিতে আগাম গমের আবাদ করেছেন তিনি। তার গম দানা বাঁধতে শুরু করেছে। গত মধ্যরাতের মাঝারি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় গম মাটিতে নুইয়ে পড়েছে।
স্থানীয় আলুচাষি সুমন মিয়া বলেন, ৭ বিঘা মাটিতে আলু উৎপাদন করেছেন। আলু উত্তোলনের কথা ছিলো। বৃষ্টির কারণে কাজ আলু উত্তোলন কাজ বন্ধ রয়েছে।
দিনমজুর রহিম মিয়া বলেন, আলুর কাজে এসেছিলাম। দেখি আলু ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। তাই কাজ বন্ধ। ফলে ফিরে যাচ্ছি বাড়িতে।
স্থানীয় মানিকের ঘরও দমকা হাওয়ায় উড়ে গেছে, তিনি ঘর মেরামত করছেন। এসময় তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে এনজিও থেকে লোন নিয়ে টিনের ঘরটি বানিয়েছি। বাতাসে টিন উড়ে গেছে। সেগুলো আবার কুড়িয়ে এনে ঘর মেরামত করছি।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ বলেন, রাতে ৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সাথে দমকা বাতাস। এতে আগাম গমের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে এবং কৃষিকাজ ব্যহত হয়েছে। কৃষকরা এখন আলু ক্ষেতে পানি না শুকানো পর্যন্ত আলু উত্তোলন করা থেকে বিরত থাকবে, সেই সাথে সার কীটনাশক ব্যবহার বন্ধ রাখবে। এখন সবচেয়ে জরুরি জমাট পানি ক্ষেত থেকে বের করার ব্যবস্থা করা।
দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি বাড়িয়েছে শীতের তীব্রতা। এমন অবস্থায় কর্মহীন হয়ে আজ ঘরবন্দী মানুষ। গবাদি পশুসহ প্রাণীকূলেও এর চরম প্রভাব পড়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন