লক্ষ্মীপুরে সড়ক সংস্কারের নামে দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় নবনির্বাচিত এক ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতার হামলায় নারীসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনকে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সদর উপজেলার চর রমনীমোহন ইউনিয়নের করাতিরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম সরকার ওই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন, চর রমনীমোহন ইউনিয়নের করাতির হাট এলাকার হারুন সর্দার (৭০), কামাল সর্দার (৩০) ও কবির সর্দার (৩০), মনোয়ারা বেগম, মনোয়ারা, ফারুক সর্দার ও সবুজ মিয়া। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আহতরা জানান, এলাকার কাদিরার গোজা-করাতিরহাট সড়কের সংস্কার কাজ চলছে। রাস্তার কাজের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন ইউপি সদস্য কামরুল সরকার। তিনি রাস্তা সংস্কারের নামে এলাকাবাসীর থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা দাবি করেন। এতে ওই এলাকার সর্দার বাড়ির লোকজন অপারগতা প্রকাশ করায় তার সাথে বিরোধ দেখা দেয়। আহতদের অভিযোগ, সদস্য পদে নির্বাচনে কামরুল সরকারকে ভোট না দেয়ায় সে তাদের উপর পূর্ব থেকেই ক্ষিপ্ত ছিল।
মঙ্গলবার দুপুরে কামরুল ক্ষিপ্ত হয়ে তার ভাই সুমন সরকার, কামাল সরকার ও হেলাল সরকারকে সাথে নিয়ে সর্দার বাড়িতে হামলা চালায়। এর জেরে বিকেলে আরেক দফা হামলা চালায় তারা। এতে নারী-পুরুষসহ ৭ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় মুদি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম সর্দার বলেন, সংস্কারকৃত রাস্তার একপাশে আমার বাড়ি, অন্যপাশে ক্ষেত। রাস্তাটি দক্ষিণ পাশে ভেঙে যাওয়ায় সেটি সংস্কার না করে উত্তর পাশে আমার বাড়ির দিকে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমি আপত্তি জানালে সংস্কারের নামে আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা ইউপি সদস্য কামরুল সরকার। এ নিয়ে আমার সাথে তার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
আহত কবির হোসেন বলেন, কামরুল সরকার রাস্তা সংস্কারের নামে তার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা দাবি করেছে। টাকা দাবির জেরে দুপুরে এবং বিকেলে কামরুল মেম্বার ও তার ভাইয়েরা মিলে আমাদের উপর হামলা করে।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য কামরুল সরকার বলেন, রাস্তা সংস্কারের জন্য দুই পাশে প্রশস্ত করা প্রয়োজন। শ্রমিকেরা কাজ করার সময় সর্দার বাড়ির লোকজন বাঁধা দেয়। এতে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। কিন্তু ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই। আমার নামে মিথ্যা রটানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে চর রমনীমোহনের ইউপি চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল বলেন, আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ইউপি সদস্য কামরুলকে বলেছি আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। আহতদের থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছি অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন