সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে মেরামতের অভাবে খানাখন্দে ভরে য়ায়। রাস্তাটি ব্যবহার করে দক্ষিণাঞ্চলে বসবাসকারীরা উপজেলা সদরে যাতায়াত করে এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের নড়বড়ে সেতুতে পারাপার হচ্ছে পথিকেরা।
এই রাস্তার রেহাইপুখুরিয়া খালে একসময় ছোট একটি সেতু ছিল। যমুনা নদীর ভাঙনের কারণে নদী কাছে চলে আসে। এবং এই খালে বাড়তে থাকে তীব্র স্রোত। স্রোতের গতি সামাল দিতে না পারায় সেতুটি ভেঙে যায়। তারপর থেকে প্রতিবছর বর্ষার আগে বাঁশের সেতু দেয়া হয়। কিন্তু বাঁশের সেতু কয়েক মাসেই নড়বড়ে হয়ে যায়, ফলে এ রাস্তায় যাতায়াতকারীদের ব্যাপক ঝুঁকি ও ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এ ছাড়াও বর্ষা মৌসুমসহ প্রায় সারা বছরই এ কাঁচা সড়কে দুর্ভোগ পোহাতে হয় উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের বাসিন্দাদের। যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় এ অঞ্চলের কৃষি পণ্যসহ সকল প্রকার পণ্য পরিবহনে ভোগান্তির পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হয়, যা অন্যান্য বাজারের তুলনায় বেশি দামে কিনতে হয় নদী ভাঙা অসহায় মানুষদের। বছরের পর বছর ধরে এলাকাবাসী রাস্তাটির পাকাকরণের দাবির প্রেক্ষিতে চৌহালী উপজেলা এলজিইডি মৌখিক আশ্বাস দিলেও এখনও কার্যকারি কোনো পদক্ষেপ দেখছে না এলাকাবাসী।
বাঘুটিয়া, খাষপুকুরিয়া ও উমারপুর ইউনিয়নবাসীর চরম কষ্টের মাঝে ইউপি কার্যালয়, হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও উপজেলায় তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে হয়। বৃষ্টির মৌসুমে রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানি আর কাদায় সড়ক ব্যবহারে অযোগ্য হয়ে থাকে।
অন্যদিকে জরুরি প্রয়োজনে অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হলে মোটরসাইকেল, ঘোড়ার গাড়ি ও কাধে খাটিয়ায় নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না, তবে বর্ষা মৌসুমে কিছুদিন নৌকায় যাতায়াত করা গেলেও তা ক্ষণিকের। বৈন্যা মোড় থেকে রেহাইপুকুরিয়া বাজার-বাঘুটিয়া ইউপি কার্যালয় হয়ে বিনানই মরা নদী পর্যন্ত এবং বিনানই হাসপাতাল মোড় থেকে সলিমাবাদ ব্রিজ পর্যন্ত একটি রাস্তা ও সেতুই বদলে দিতে পারে এলাকাবাসীর চলাচলের চিত্র ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড।
বিনানই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব হাসান জানান, আমাদের দক্ষিণাঞ্চলে কোনো পাকা সড়ক নেই। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও আমাদের এখানে কোন উন্নয়ন নাই।
এ প্রসঙ্গে চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন সরকার বলেন, ইতোমধ্যে রাস্তাটির মাটি ভরাটের জন্য জাইকা প্রকল্প থেকে ৬০ লাখ টাকার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এখন টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেই মাটি ভরাটের কাজ শুরু হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, রাস্তাটি পাবনা-বগুড়া প্রকল্পের ২য় ফেজ এর অনুমোদনে আছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হবে এবং টেন্ডার হলে কাজ শুরু করা যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন