জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোলা বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত প্রতাপনগর ও শ্রীউলা ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের ১৮ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে। রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, পুকুর, পশুপাখি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসা-বাণিজ্য, ফসল, সুপেয় পানি, স্যানিটারি পায়খানা ব্যবস্থা বিনষ্ট হওয়ায় এলাকা খাঁ খাঁ করছে। কোন এনজিও এখনো এলাকাবাসীর পাশে না দাঁড়ানোয় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর কোলা বেড়িবাঁধের ২০০ ফুট ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। সপ্তাহব্যাপী প্লাবিত থাকার পর রিং বাঁধের মাধ্যমে পানি বন্ধ করা হলেও এলাকার ১৫০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রায় ১৮ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। ৫ হাজার মৎস্য ঘেরের ২১ হাজার বিঘা জমির মাছ ও ২৬০০ পুকুর ভেসে গেছে। ৭০টি গরু, ১০০০ ছাগল, অসংখ্য হাঁসমুরগি মারা গেছে। হাজরাখালী মাদরাসা, কাকড়াবুনিয়া হাই স্কুল ও প্রাইমারি স্কুল, কলিমাখালী, বালিয়াখালী, নছিমাবাদ প্রাইমারি স্কুল, গাজীপুর কুড়িগ্রাম ও কলিমাখালী মাদরাসা নষ্ট হয়ে গেছে। ১০টি মসজিদ ও ৭টি মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৫০টি মুরগি ফার্ম, ২০০০ পায়খানা ঘর, শতাধিক টিউবওয়েল ও বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নষ্ট হয়ে গেছে। বেশ কিছু কবরস্থান, ৩০টি কাঁচা রাস্তা, ১৪টি পাকা রাস্তা পানির তোড়ে সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়েছে। আশাশুনি কোলাঘোলা সড়কের কলিমাখালী থেকে ঘোলা ত্রিমহনা পর্যন্ত সড়ক ও জনপথ বিভাগের পাকা সড়ক সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয়ে গেছে। আশাশুনি থেকে সড়কটিতে মিনিবাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কলিমাখালী থেকে সড়কে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ২০০ বিঘা জমির আমন ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল জানান, ১০ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয়ে রিং বাঁধের কাজ করা হলেও এ পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ১ লক্ষ টাকা তাৎক্ষণিক সহায়তা করা হয় এবং পাউবো’র পক্ষ থেকে ৫৫ হাজার বস্তা দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংগ্রহ করেন। সরকারি কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে এখনো কোন বরাদ্দ না দেয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। রিং বাঁধের বস্তা ও বাঁশের মধ্যে দিয়ে চুইয়ে পানি ভিতরে আসছে। সেখানে পাউবো ও চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে কাজ করা হচ্ছে। ঘরবাড়ি হারা, সহায় সম্বলহীন মানুষের পাশে সরকারিভাবে এবং বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে সহযোগিতা নিয়ে হাজির হওয়া অতীব জরুরি। রিং বাঁধটি দীর্ঘস্থায়ী করতে পরিকল্পিতভাবে সেখানে কাজ করার দাবিও জোরদার হচ্ছে। সাথে সাথে আশাশুনি সাতক্ষীরা সড়কের কাজ দ্রুততার সাথে করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও সকল প্রতিষ্ঠান সংস্কার ও নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া জরুরি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন