শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

পানিবদ্ধতা নিরসনসহ ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ সমাপ্তির পথে

তারাব পৌরসভা

প্রকাশের সময় : ৫ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে

রূপগঞ্জ উপজেলা ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে অবস্থিত। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তারাব পৌরসভা। তারাব পৌরসভাকে একটি আধুনিক ও ডিজিটাল পৌরসভা করার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন তারাব পৌর মেয়র হাসিনা গাজী। মাত্র এক বছরে তারাব পৌরসভার পুরো চিত্রই পাল্টে দিয়েছেন তিনি। যেসব এলাকায় কয়েক বছর আগেও জলাবদ্ধতা লেগেই থাকতো সেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষে খাল খনন করা হয়েছে। শুধু তাই নয় মাদক নির্মূলেও তিনি কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছেন। ইতোমধ্যেই তারাব পৌরসভায় ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকার রাস্তা, ড্রেন ও খাল খননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পৌর অফিস সূত্র ও সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, রূপসী ইসলামীয়া মাদ্রাসা থেকে স্লুইচগেট পর্যন্ত, তারাব পৌরসভার হাইওয়ে থেকে খাদুন পর্যন্ত, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে সংলগ্ন তেতলাবো সংযোগ, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে সংলগ্ন আরিয়াবো, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে সংলগ্ন বরাব থকে রসূলপুর সংযোগ সড়কে আর, সি, সি কালভার্ট কালভার্ট নির্মাণ কাজ করা হয়। এছাড়াও জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষে গর্ন্ধবপুর, রূপসী, খদুন, তারাব, বরাব, রসূলপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ড্রেন নির্মাণ করা হয়। গর্ন্ধপুর নোয়াগাঁও কালভার্ট থেকে বোচারবাগ পর্যন্ত, রূপসী থেকে বরপা পর্যন্ত, রূপসী ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে স্লুইচ গেট পর্যন্ত, খাদুন রোড থেকে যাত্রামুড়া পাম্প পর্যন্ত, নোয়াপাড়া জামাদানী বিসিক এলাকা থেকে বরাব মাহসড়কসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে খাল খনন করা হয়। কৃষকদের ফসল যাতে নষ্ট না হয় ও পানি নিষ্কাশনের জন্য রূপসী, বরপা, খাদুন, মৈকুলীসহ বিভিন্ন এলাকায় খাল খনন করা হয়। যার ফলে এখন আর এলাকাগুলোতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় না। এছাড়া সহজেই পানি নিষ্কাশন করা যাচ্ছে। কৃষকরাও ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করতে পারছে। এদিকে, তারাব পৌরসভার অনেক এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। রাস্তাঘাটে পানি জমে থাকা, রাস্তা ভাঙা এসব কারণে জনগণের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হাসিনা গাজী নতুন রাস্তা নির্মাণ ও রাস্তার মেরামত করে। যার মধ্যে অন্যতম হলো বরপা এলাকার তেতলাব থেকে দক্ষিণ জামে মসজিদ পর্যন্ত, গর্ন্ধপুর থেকে কর্নগোপ পর্যন্ত, মৈকুলী ইদগাহ মাঠ ও সড়কসহ পৌরসভার আশপাশের এলাকাগুলোর রাস্তা নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। এছাড়া জনগণকে বিশুদ্ধ পানি সরবারহের ক্ষেত্রে গভীর নলকূপ স্থাপন করে সবার বাড়িতেই পানি সরবারহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দিঘী বরাব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে যে রাস্তাটি ভাঙা ছিল, রাস্তাটিতে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকতো, রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হতো। ওই রাস্তাটির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। এছাড়া পৌরসভার বিভিন্ন স্কুল কলেজের ভবন নির্মাণ ও মেরামত করা হয়েছে। পৌরসভার যেসব নিচু এলাকাগুলো আছে সেসব এলাকায় ড্রেন নির্মাণ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমজাত হোসেন নামে এক কৃষক জানান, তার বাড়ি তারাব পৌরসভার কাহিনা এলাকায়। উপযুক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় তার জমির ফসলের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হতো। এছাড়া জমিতে যথা সময়ে পানি না দিতে পারলে এবং যথা সময়ে পানি নিষ্কাশন না করতে পারলে ফসল নষ্ট হয়ে যেতো। খাল খনন করায় যথা সময়ে জমিতে পানি দেওয়া ও পানি নিষ্কাশন করা যাওয়ার ফলে এখন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কমে যায়। পৌর সচিব তাইজুল ইসলাম জানান, ১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকার রাস্তা ও ড্রেনের কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকার রাস্তা, ড্রেন ও খাল খননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজও খুব দ্রুত শেষ করা হয়ে যাবে। পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ নগর অঞ্চলগুলো উন্নয়নের জন্য ৭৫ লাখ টাকার কার্পেটিং রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। একই প্রকল্পের অধীনে ১ কোটি ৫ লাখ টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এরইমধ্যে তারাব পৌরসভা (ইউজিআইপি) নগর অঞ্চল ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যেই ১৮ কোটি টাকার বিভিন্ন রাস্তা ও ড্রেনের উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে যা অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তারাব পৌরসভার নিজস্ব তহবিল ও এডিপি বাৎসরিক উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে ৪ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন আছে। এরইমধ্যে পৌসভায় ই-সেবা চালু করার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া হেল্প ডেস্কে এটুআই প্রোগ্রামের আওতায় তথ্য সেবা কেন্দ্র চালু হয়েছে। জনগণের কাজকে আরো দ্রুত করার লক্ষে অনলাইনের মাধ্যমে জনসেবা নিশ্চিতকরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। পৌর মেয়র মিসেস হাসিনা গাজী বলেন, রাস্তাঘাট, পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহসহ অন্যান্য সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি মাদক, যৌতুক, ইভটিজিং, মানবপাচার, জঙ্গিবিরোধী কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। কোনো মাদক বিক্রেতাকে ছাড় দেয়া হবে না। ইতোমধ্যে বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীদের ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি। এছাড়া কোনো মাদক ব্যবসায়ীকে ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা করেছি।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন