সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

নাব্য সঙ্কটে নৌযান চলাচল ব্যাহত

খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র এখন খাল

ফয়সাল হক, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

কুড়িগ্রামের চিলমারীর খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র নদ এখন নাব্যতা হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে খনন না করায় পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে নদের বুকে জেগে উঠছে চর। আর বর্ষা মৌসুমে চরাঞ্চলের এসব গ্রাম থাকছে বন্যার চরম ঝুঁকিতে।
বর্তমানে চিলমারী উপজেলার নৌবন্দর ঘেঁষে প্রবাহমান ব্রহ্মপুত্র নদটি নাব্যতা হারিয়েছে মরাখালে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ লোকজনই পায়ে হেঁটে ব্রহ্মপুত্র নদের চর পাড়ি দিচ্ছে। অষ্টমির চর, নয়ারহাট, করাই বরিশাল, চরসহ বিভিন্ন স্থানের লোকজন এবার ব্রহ্মপুত্র নদে ইরি-বোরো চাষের প্রতিযোগীতায় নেমেছেন। নদে চর জেগে উঠায় বন্ধ হয়ে গেছে দুই শতাধিক পরিবারের মাছধরা ও নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথ। বিশাল নদটিতে চর জেগে পরিণত হয়ে ছোট্ট একটি খালে।
নৌকার মাঝিরা জানান, শুকনো নদী, অনেক দূর ঘুরে ঘুরে যাইতে হয় তাই সময় ও তেল খরচ বেশি পরে। নৌকায় পারাপারের যাত্রী নেই। ইঞ্জিন চালিত প্রায় সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। তাই খুবই কষ্টে দিনযাপন করছি। কৃষক লতিফ মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন আগে নদী ভাঙনে জমি চলে গেছে। আমি এখন চর জেগে ওঠা নদের বুকে সামান্য বোরো আবাদ করছি।
গ্রীষ্ম মৌসুমে শুকিয়ে জেগে উঠছে চর। আর বর্ষা মৌসুমে এই ব্রহ্মপুত্র নদের গভীরতা হ্রাস পাওয়ায় সামান্য পানিতেই ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আর বন্যা এই এলাকার মানুষের জন্য একটি অভিশাপ। প্রতি বছরেই বন্যার কারনে নানান সমস্যার মধ্যে পরতে হয়। ২০১৬ সালে ৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিলমারীতে আগমন করেন এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি জানান, চিলমারী নদীবন্দরকে একটি পূর্নাঙ্গরূপ দেবে কিন্তু বছরের পর বছর গেলেও কোন কাজ দৃশ্যমান হচ্ছে না বলে অভিযোগ এ অঞ্চলের জনগনের। তারা মনে করেন নদী খনন করে গভীরতা বাড়ালেই তাদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে।
স্কুল শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নদীর উপরও পড়ছে। তাই গ্রীষ্ম মৌসুমে শুকিয়ে যাচ্ছে আর বর্ষা মৌসুমে বন্যা ও নদী ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র নদ খনন করা না হলে চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়ন ও পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের অনেক গ্রাম বর্ষা মৌসুমে বন্যায় কবলিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদ শুকিয়ে যাওয়ায় এসব গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার পরিবর্তন হচ্ছে।ব্রহ্মপুত্র নদে পানি না থাকায় গাছপালা ও কৃষি উৎপাদনের প্রভাব পড়ছে। উপজেলার সবজি আবাদের কমে যাচ্ছে উৎপাদন।
ব্রহ্মপুত্র নদের সংস্কার না হলে বর্ষা মৌসুমে চরম হুমকির শিকার হবে উপজেলার চরাঞ্চলের গ্রামগুলো। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদীর নাব্যতা হারিয়ে বেকার হয়ে যাবে নদীতে নৌকা চালিয়ে জীবন যুদ্ধ করা নৌকার মাঝি প্রায় দুই হাজার পরিবার।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ চিলমারী পাইলট মাইদুল ইসলাম বলেন, নাব্যতা সঙ্কটের কারণে বিভিন্ন চ্যানেল বন্ধ হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত নদী খননের ব্যবস্থা করলে এই পরিস্থিতি পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন