শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

সখিপুরের সাগরদীঘি-জোড়দীঘিতে অবৈধ করাতকল, উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল

প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো.শরীফুল ইসলাম, সখিপুর (টাঙ্গাইল) থেকে

বনের গাছ ও সম্পদ রক্ষায় আইন করে ১০কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপনের বিধি উপেক্ষা করে টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার উত্তর সীমান্ত এলাকা ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া রেঞ্জের সাগরদীঘি বিটের আওতায় সাগরদীঘি ও জোড়দীঘিতে গড়ে উঠেছে ২০টি অবৈধ করাতকল। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ওইসব করাতকলে দিনরাত শাল গজারিসহ সামাজিক বনায়নের কাঠ দেদারছে চিড়াই করা হচ্ছে। বন বিভাগের তালিকা ও করাতকল মালিক সমিতিতে সরেজমিনে দেখা যায়, সাগরদীঘি বিট কার্যালয়ের ৫০ থেকে ৪শ’ গজের মধ্যে মোস্তফা, বিল্লাল, চানমিয়া, ফজল, রফিক, হাবিব, জামাল, দুলাল, মাসুদ, জাহাঙ্গীর ও ফজলুল হকের ১২টি করাতকল। জোড়দীঘিতে ইদ্রিস, ইউসুফ, আহাম্মদ, আজাহার, হেলাল, ইয়াদ আলী ও মো. নান্নু মিয়ার ৬টি করাতকল। কামালপুরে আসলামের, আশরাফের ২টি করাতকল। সংরক্ষিত বনের পাশে করাতকল গড়ে তুলে যেভাবে দিনে রাতে নির্বিচারে গাছ কেটে চিড়াই করে পাচার করা হচ্ছে অল্পদিনেই ঐতিহ্যে ভরা সাগরদীঘি ও জোড়দীঘি বনাঞ্চল থেকে শাল গজারি ও সামাজিক বনায়ন বিলীন হয়ে যাবে। আর এর নেতিবাচক প্রভাব পরিবেশের উপরই পড়বে। ওইসব করাতকলে গজারি, সেগুন ও আকাশমনি গাছের অনেক গুঁড়ি দেখা যায়। বন কার্যালয়ের পাশে করাতকল কিভাবে চলছে? সাগরদীঘি বিট অফিসার আমিনুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে, এ ব্যাপারে তিনি কোন কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিটি করাতকল মালিকের নাম জানা গেলেও বৈধ কাগজপত্র ও লাইসেন্স না থাকায় কোন করাতকলের প্রকৃত মালিক কে তা কেউ স্বীকার করতে চায় না। তবে অবৈধ করাতকল মালিকদের নিয়ে সাগরদীঘিতে একটি সমিতিও রয়েছে। এ সমিতিতে সাগরদীঘির মো. ফজলুল হক সভাপতি ও জাহাঙ্গীর ভূইয়া সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন। সভাপতি-সম্পাদক জানান, প্রতি করাতকল থেকে প্রতিমাসে বিট অফিসে ২হাজার টাকা দিয়ে আমরা করাতকল চালিয়ে যাচ্ছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন করাতকল মালিক বলেন, একটি অবৈধ করাতকলে প্রতিদিন গড়ে ৬০ ঘনফুট অবৈধ কাঠ চেরাই হয়। মাসে চার শুক্রবার বন্ধ থাকে। সেই হিসাবে সাগরদিঘী ও জোড়দিঘীতে প্রতি মাসে ওই ২০টি অবৈধ করাতকলে অবৈধভাবে গড়ে ৩৫ হাজার ঘনফুট কাঠ চেরাই হচ্ছে। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর বনবিভাগ ২/৩টি করাতকলে অভিযান করে চলে যায়। পরবর্তীতে পূণরায় করাতকলগুলোতে দেদারছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাঠ চেড়ানো হয়। বর্তমানে সখিপুর ও ঘাটাইল উপজেলায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভিতর শতাধিক করাতকল দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা চলছে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাসুদ রানা মুঠোফোনে বলেন, অচিরেই ট্রাস্কফোর্স গঠন করে অবৈধ করাতকল উচ্ছেদ করা হবে ও অবৈধ করাতকল মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন