সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সুপারি বাগানে আগ্রহী হয়ে উঠছেন ফুলবাড়ীর কৃষক

মহসিন আলী মনজু, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:২৭ এএম

ভালো বাজারমূল্য, কম খরচ, বেশি লাভ এবং বছর শেষে এক সাথে মোটা অংকের টাকা হাতে আসায় ফুলবাড়ীতে সুপারি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে কৃষক। বাড়ির পেছনে বা বাড়ি থেকে দূরে উচু ভিটা জমিতে সুপারির বাগান লাগিয়ে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। এতদিন এ অঞ্চলে বাড়ির পাশে সুপারি বাগান করার রেওয়াজ ছিল।

সারা বছরের সুপারির চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি সুপারি বিক্রি করত। এখন সে রেওয়াজ ভেঙে বাড়ি থেকে দূরে উঁচু ভিটা জমিতে বাণিজ্যিক সুপারি বাগান করার হিড়িক পড়েছে। সুপারির প্রতি উত্তর বঙ্গের মানুষের দুর্বলতা প্রাচীনকাল থেকেই। নিকট স্বজন এলে প্রথম পান-সুপারি দিয়ে আপ্যায়ন করার রিতি এখনও প্রচলিত। লোকসাহিত্য ও গানে পান দিয়ে প্রিয়জনকে প্রথম আপ্যয়ন করার উপমা ছড়িয়ে আছে। সুপারিগাছ ছাড়া এ অঞ্চলে কোন বাড়ি কল্পনা করা যায় না। বর্তমানে ভালো লাভ হওয়ায় বাগান লাগিয়ে সুপারির বাণিজ্যিক চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে কৃষক। সুপারি গাছ সাধারনত বছরে একবার ফল দেয়। এক বিঘা জমিতে দেড় থেকে দুশ’ সুপারি গাছের বাগান লাগানো যায়। প্রতি ১ বিঘার বাগান থেকে বছরে দের থেকে দু’ লাখ টাকার সুপারি বিক্রয় করা হয়। চারা রোপণসহ গাছে ফল ধরা পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ বছর সময় লাগে। একটা বাগান ৩০ থেকে ৪০ বছর পযর্ন্ত ফল দেয়। কোন গাছ মরে বা ভেঙে গেলে বাগানে তা পুনরায় রোপণ করা হয়। জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত গাছ থেকে সুপারি পাড়া হয়। কাঁচা, পাকা, মজা ও শুকনা অবস্থায় সুপারি বাজারজাত করা হয়। বর্তমানে সুপারির চারাও বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বাগানে সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে চারাও বড় করা হয়। প্রতিটি চারার মূল্য বয়স ভেদে ৫০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। ফলে বড়, মাঝারি, ছোট সব কৃষকই ঝুকছে সুপারির বাগান করার কাজে।

বড়ভিটা গ্রামের বড় কৃষক (প্রভাষক) কামরুজ্জামান লাভলু বলেন, তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে সুপারির বাগান লাগিয়েছেন। ২/১ বছরের মধ্যে তার বাগানে ফল ধরা শুরু হবে। একই গ্রামের শাহানুর ১ বিঘা, গোলাম মোস্তফা ১বিঘা, মোজাফফর হোসেন ১ বিঘা ও বান চন্দ্র ৩ বিঘায় সুপারি বাগান লাগিয়েছেন। ডা. এনামুল হক বলেন, তার বাড়ির আশপাশের পতিত জমিতে একশ’ গাছ লাগিয়েছেন। পরিপূর্ণ ফল ধরা শুরু হলে যতটি গাছ বছরে তত হাজার টাকা বিক্রি করা যায়। সুপারির বাগানে বছরে ১ বার ঝোপ-ঝাড় পরিষ্কার করা হয়। তবে বাণিজ্যিক বাগান সাফ-সুতোরো বেশি রাখা হয়। বর্তমানে অনেকেই রাশায়নিক সার প্রয়োগ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন। ফুলবাড়ীতে উৎপাদিত সুপারির মান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর চাহিদা রয়েছে। ভালো লাভে দিন দিন বেড়েই চলছে সুপারি বাগান এর সংখ্যা।

এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা. লিলুফা ইয়াসমিন বলেন, ফুলবাড়ীতে প্রায় ১০৫ হেক্টর জমিতে সুপারির বাগান লাগানো হয়েছে। ভালো ফলন এবং রোগ-বালাই’র জন্য বাগান মালিকদের সবসময় প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। উৎপাদন বেশি ও সুপারির মান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন