বিশ্বনাথ উপজেলার উত্তর সীমান্তে সুরমা নদী থেকে উৎপত্তি হওয়া খাজাঞ্চী-মাকুন্দা ও কাপনা নদীতে চলছে খনন কাজ। খনন কাজে চলছে নানা অনিয়ম। লামাকাজী ইউনিয়নের বাংলাবাজার ও নোয়াগাঁও এবং রামপাশা ইউনিয়নের জমশেরপুর থেকে রামাপাশা গ্রাম পর্যন্ত নদীর দুই তীরে রয়েছে অসংখ বাড়িঘর ও দোকানপাট। এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেয়ার হুমকি দিয়ে খননের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের দায়িত্বে থাকা লোকদের সাথে স্থানীয় কতিপয় লোক মিলে চলছে চাঁদাবাজি। দেদারছে বিক্রি হচ্ছে খননের মাটি।
সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে রামপাশা ইউনিয়নের জমশেরপুর নোয়াগাঁও, আমতৈল, বৈরাগীবাজার, ধলিয়াপাড়া এলাকার হুমায়ুন আহমদ, আব্দুর রহিম, লিলু মিয়া, এমাদ উদ্দিন, আলাই মিয়া, সুরুজ আলী, নুরুল হক, মোহাম্মদ আলীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক লোকজন চাঁদা তোলা ও মাটি বিক্রির কথা জানান।
এদিকে নদীর তলদেশ খনন না করে নদীর তীরের পাশে সামান্য দায়সারা মাটি কাটা হচ্ছে। নদীর মূল অংশতে কোন মাটি কাটা হচ্ছে না। আমতৈল, জমশেরপুর এলাকার মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের গরীব লোকজন টাকা দিতে না পারায় তাদের ভাঙনকৃত নদীর তীরও খনন করে ফেলা হয়েছে। যেকোন সময় নদীতে পানি আসলে জমশেরপুরের শতাধিক ঘর-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একটি সূত্রে মতে ২৮ কিলোমিটার নদী খননের জন্য ১৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্ধ করা হয়। রাজধানীর গুলশান প্লট নং-২, দর্পন কমপ্লেক্সের এসএ, এসআই ইসরাত এন্টারপ্রাইজ জেবী প্রথম ১৫ কিলোমিটার এবং পূবালী এন্টারপ্রাইজ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান ১৩ কিলোমিটার নদী খননের কার্যাদেশ পায়। মরা সুরমায় ২.২ কিলোমিটার থেকে খাজাঞ্চী নদী ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রথম ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ৪ লাখ ৬৫ হাজার ঘনমিটার মাটি নদীর তলদেশ থেকে কাটার কথা রয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। পূবলী এন্টারপ্রাইজ দ্বিতীয় অংশে ৩ লাখ ২৮ হাজার ঘনমিটার মাটি কাটার কথা এবং এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা। মাটি কাটার পর খননকৃত মাটি দিয়ে নদীর তীর সংরক্ষণ তথা ও বেড়িবাঁধের মতো রাস্তা করার কথা এবং বৃষ্টির পানিতে মাটি যাতে নদীতে না পড়ে সে জন্য ঘাস ও গাছ লাগানোর কথা, কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নদী খনন করছেই না, বরং নদীর তীরের কিছু মাটি কেটে নদী ভাঙনের পথ সুগম করে দিচ্ছে। সরকারের নিদের্শনা মতে, ২৮কিলোমিটার নদী খননের স্থানে ১০মিটার থেকে ২০মিটার পর্যন্ত খননস্থান গভীর হতে হবে। যেখানে খনন হবে না, সে স্থান খননের আওতায় হিসাবও ধরা যাবে না।
এ ব্যাপারে রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর হোসেন জানান, ঠিকাদার নদীর চর খনন করে নদীর তীরে মাটি দিচ্ছে না। সিডিউল মোতাবেক কাজ করার দাবি করছি।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের আসিফ নামের এক কর্মকর্তা বলেন, টাকা উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ঠিকাদারকে সিডিউল মোতাবেক কাজ করার জন্য কঠোর নিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে। কাজের এসও সেলিম জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমি সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি দেখবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন