রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

হিজাবের মাধ্যমে নারির আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি পায়

রবিউল আলম | প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০২২, ১২:০৮ এএম

ইসলাম এমন জীবন ব্যবস্থা যেখানে একজন মানুষের আত্মমর্যাদা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক নির্দেশনা রয়েছে। নারীর যথাযথ অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করে তাকে সম্মানের সুউচ্চ আসনে আসীন করেছেন। নারীর মর্যাদা রক্ষায় যাবতীয় পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। যেমন- অনিবার্য কারণ ব্যতিত পরপুরুষের সাথে কথা বলার অনুমতি দেয়নি। আবার প্রয়োজনে বাক্যলাপ করতে হলে মধুর স্বরে এবং আকর্ষণীয় ভাব ভঙ্গি সহকারে করতে পারবে না বরং কর্কশ স্বরে কথা বলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কারণ সাধারণ মহিলা তো দূরের কথা, স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীগণ যেখানে সাধারণ উম্মতের মাতৃতুল্য। তাদেরকেও একান্ত প্রয়োজন ব্যতিরেকে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা আকর্ষণীয় ভাব-ভঙ্গির ফলে মানুষের প্রতি কামনা ও লোভনীয় ভাবের উদ্রেক হতে পারে। এজন্য সম্ভাবনাপূর্ণ পথ আগে থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ইসলাম নারীর সম্মান-মর্যাদা রক্ষার পদক্ষেপ গ্রহণ করে নারীর মান সম্মান ইজ্জত হেফাজতের স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে পর্দা বা হিজাব বেছে নিয়েছেন। মূলত হিজাব বা পর্দা নারীর সৌন্দর্য ও আত্ম মর্যাদার প্রতীক। হিজাব নারীর ইজ্জত-সম্ভ্রমের রক্ষাকবচ। এটি নারীর চরিত্র রক্ষার অতি সহজ ও কার্যকর উপায়। এ বিধান পালনের মাধ্যমে হৃদয়-মনের পবিত্রতা অর্জন হয়। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এ বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ।’ (সূরা আহযাব: ৫৩)
ইসলাম পর্দা পালনের বিধান আরোপ করেছে। এর মূল কারণ হলো, অশ্লীলতা ও ব্যভিচার নিরসন এবং সামাজিক অনিষ্টতা ও ফেতনা-ফাসাদ থেকে বাঁচার নিমিত্তেই করেছে। নারীদের প্রতি কোনো প্রকার অবিচার কিংবা বৈষম্য সৃষ্টির জন্য করেনি।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন-
হে নারীগণ! তোমরা ঘরে অবস্থান করো, আর প্রাথমিক যুগের মূর্খতার ন্যায় নিজ সৌন্দর্যের প্রদর্শনী করতঃ চলাফেরা করোনা।( সূরা আল আহযাব:৩৩)
ইসলাম পর্দা পালনের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ এটি একটি সার্বক্ষণিক পালনীয় বিধান। অন্যান্য ফরজ বিধানের মতো এটাও পালন করা ফরজ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যখন তোমরা তাদের নিকট কিছু চাইবে তখন পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এ বিধান তোমাদের ও তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ’। (সূরা আহযাব: ৫৩)
হাদীস শরীফেও পর্দার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হযরত আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, নারী পর্দাবৃত থাকার বস্তু। যখন সে পর্দাহীন হয়ে বের হয় তখন শয়তান তার দিকে চোখ তুলে তাকায়। (তিরমিযী: ১১৭৩)
বর্তমানে নারীরা হিজাববিহীন চলাফেরার কারণে অনেক সময় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়। যেমন- ইভটিজিং, ধর্ষণ সহ নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। হিজাব পরিধানের ফলে এসব সমস্যা থেকে অনেকটা রেহাই পায়।
হাদীসে এসেছে-
হযরত আলী (রা.) বর্ণনা করেন, একদা তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকটে ছিলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (সাহাবীদের উদ্দেশ্যে) বললেন, মহিলাদের জন্য সর্বোত্তম বিষয় কোনটি? তারা চুপ হয়ে গেলেন। (কেউ বলতে পারলেন না)
অতপর আমি ফিরে এসে ফাতেমা (রা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম, মহিলাদের জন্য সর্বোত্তম বিষয় কোনটি ? তিনি বললেন, কোনো পরপুরুষ তাকে দেখবে না (অর্থাৎ নারী পর্দাবৃত থাকবে)। তারপর আমি ঐ বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, নিশ্চয় ফাতেমা আমার অংশ, সে সত্য বলেছে)। (মুসনাদুল বাযযার: ৫২৬)
পর্দা মানে রুদ্ধ জীবন নয় শরিয়তের পর্দা মানে ঘরে অবরুদ্ধ হয়ে জীবিত অবস্থায় মরে থাকা বা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাদণ্ড নয়। পর্দা মানে শরিয়ত সম্মত পোশাক এবং নিজেকে হেফাজত বা ইজ্জতের সুরক্ষা,যা ইসলামে নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য প্রযোজ্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Moinuddn ৫ এপ্রিল, ২০২২, ২:১৯ পিএম says : 0
পর্দা মানে শরিয়ত সম্মত পোশাক এবং নিজেকে হেফাজত বা ইজ্জতের সুরক্ষা,যা ইসলামে ভাই বোন উভয়ের জন্য রয়েছে। ============== আল্লামা ইমাম হায়াত (বস্তুর উর্ধ্বে মানবসত্তার প্রবক্তা ও প্রতিষ্ঠাতাঃ ওয়ার্ল্ড সুন্নী মুভমেন্ট ( World sunni movement ) প্রবর্তকঃ ওয়ার্ল্ড হিউম্যানিটি রেভুলুশন ( World humanity revolution)
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন