বাঙালির জাতি রাষ্ট্রের ‘স্বপ্নদ্রষ্টা’ ও ‘রূপকার’ সিরাজুল আলম খানকে নিয়ে কল্পকাহিনী এবং ইতিহাস বিকৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অর্থাৎ স্বাধীনতার পটভূমি তৈরিতে ইতিহাসের অন্যতম চরিত্র সিরাজুল আলম খান। আন্দোলন সংগ্রামে তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। তিনিই ছাত্র যুব সমাজকে পরিকল্পিতভাবে সংগঠিত ও স্বাধীনতার মহামন্ত্রে উজ্জীবিত করেন।
গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে রব বলেন, বাঙালির জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে স্বাধীনবাংলা নিউক্লিয়াস, বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদানের পরিকল্পনা, বিএলএফ বা মুজিব বাহিনী গঠন, বাংলাদেশের পতাকা তৈরি ও উত্তোলন, ইশতেহার প্রণয়ন, জাতীয় সঙ্গীত নির্ধারণ, জয় বাংলা সহ সকল সেøাগান নির্ধারণ, আন্দোলন-সংগ্রামের পরিকল্পনা ও কৌশলসহ বহু যুগান্তকারী পদক্ষেপ ও ঐতিহাসিক ঘটনার নেপথ্য নায়ক সিরাজুল আলম খান। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের অন্যতম কারিগর সিরাজুল আলম খান। তিনি বলেন, ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ তাৎক্ষণিক নয়, বরং পূর্ব পরিকল্পিত। তখনকার প্রেক্ষাপটে ক্ষমতার বলয়, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সংগ্রামের সম্ভাব্য পথরেখা এবং বাস্তবতা বিবেচনায় নির্বাচনের ম্যান্ডেট অনুযায়ী ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবির পাশাপাশি যুগপৎ ভাবে অসহযোগ ও স্বাধীনতার আন্দোলনের ডাক এবং ‘স্বাধীনতার’ আহŸান সবকিছুই পরিকল্পনার বহিঃপ্রকাশ। এসবের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ইতিহাস থেকে সিরাজুল আলম খানকে বিচ্ছিন্ন করার কোনো অবকাশ নেই। তাৎক্ষণিকতা দিয়ে একটি পরাধীন জাতিকে রাষ্ট্র নির্মাণের লক্ষ্যে সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামের দিকে ধাবিত করা যায় না।
তিনি আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে যার যা অবদান তা মুছে সমগ্র মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে একটি পরিবারের কাছে বলি দেয়া হচ্ছে, এটা ভয়ংকর অন্যায়। ইতিহাস থেকে মওলানা ভাসানী, তাজউদ্দিন আহমেদ, জেনারেল ওসমানীসহ সেক্টর কমান্ডারদের অনন্য সাধারণ বীরত্বপূর্ণ ভূমিকাকে ক্রমাগত অস্বীকার করে মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।
রব বলেন, ছাত্রলীগকে বাদ দিয়ে স্বাধীনতার ইতিহাস লেখা সম্ভব নয়। নিউক্লিয়াস এবং সিরাজুল আলম খানকে অস্বীকার করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকেই প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। সিরাজুল আলম খান সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন স্বাধীনতার বেদীতে, ব্যক্তিগত কোনো প্রাপ্তি বা খ্যাতির জন্য নয়। সিরাজুল আলম খানকে ইতিহাসই ধারণ করবে, কেউ ইচ্ছা করলেই ইতিহাস থেকে তাকে ছেঁটে ফেলতে পারবে না। কারণ সিরাজুল আলম খান নিজেই ইতিহাসের বিষয়। ঐতিহাসিক ন্যায্যতার প্রয়োজনে সিরাজুল আলম খান সম্পর্কে অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকার জন্য আহŸান জানান রব।###
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন