শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

৭৪’র দুর্ভিক্ষের দিনগুলো ফিরে এসেছে: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০২২, ৭:২৮ পিএম

দেশে চারিদিকে কেবল হাহাকার ধ্বনি মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ কবলিত দিনগুলোর কড়চা ফিরে এসেছে। আওয়ামী লীগ জাতিকে শোষক আর শোষিতে স্পষ্ট বিভাজিত করেছে। গত এক যুগে কালো কোটওয়ালারা বেদম চুরিদারি আর লুট-লোপাটে বনে গেছে ধনকুবের। আর দেশের মানুষ হয়েছে নিঃস্ব ও সর্বশান্ত। কেউবা ঝুলছে টিসিবির ট্রাকের পেছনে, কেউবা আত্মহত্যা করছে, সন্তান-কিডনি বিক্রি করছে।

শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশের দরিদ্র মানুষের চিত্র তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, নিরন্ন ফাতেমারা দুই কেজি চালের জন্য টিসিবির ট্রাকে ঝোলে! ক্ষুধার জ্বালায় সিরাজগঞ্জের আফরোজারা আত্মহত্যা করছে। অভাবের তাড়নায় পিরোজপুরের পরিমল বেপারীরা প্রিয় সন্তানকে বিক্রি করে দিচ্ছে। দিনাজপুরের হিলির সোনালী বেগমরা ক্ষুধার্ত শিশু সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে মাথার চুল বিক্রি করছে। জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ বোড়াই গ্রামের জোছনা বেগমরা অভাবের তাড়নায় কিডনি বিক্রি করে দিচ্ছে। ভিক্ষা নয়, ঘাম ঝরিয়ে রোজগার করা কষ্টের টাকায় দুটো নিত্যপণ্য কিনতে টিসিবির ট্রাকের পেছনে হাত বাড়িয়ে রুদ্ধশ্বাসে ছুটছে জনতা। জীবনের তাগিদ তাদেরকে শরম-লজ্জা ভুলিয়েছে। আর তখনই কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিদেশ থেকে অভিনেত্রীদের নিয়ে এসে আলোকোজ্জল বিয়ে বাড়িতে চলছে উদ্দাম নাচ।

তিনি বলেন, হিটলার বলেছিলো: “মানুষকে এতটাই বিপদের মধ্যে রাখো যে, শুধু নিজের বেঁচে থাকাটাই তার কাছে উন্নতি বলে মনে হবে।” গণতন্ত্রের নামে জনগণকে প্রতারণা করে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে এই আওয়ামী নিশুতি সরকার একটা গোটা জাতি ও রাষ্ট্রকে পথে বসিয়ে দিয়েছে। এই অবস্থা জনগণ আর চলতে দিবে না।

দেশে ও জনগণের কল্যাণে যা কিছু অর্জন সবকিছুই বিএনপির হাত ধরে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ থেকে আধুনিক, স্বনির্ভর, গণতান্ত্রিক এবং কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এশিয়ার এমারজিং টাইগারে পরিণত হয়েছিল। আর এখন গণতান্ত্রিক বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের পরিচয়, গভর্নমেন্ট অফ দ্যা মাফিয়া, বাই দ্যা লুটেরা, ফর দ্যা গুম-হত্যা। এই বাংলাদেশকে আবারো সাতই নভেম্বরের চেতনায় ফিরিয়ে আনতে হবে। ৭ নভেম্বরের চেতনা মানেই গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবাধিকার, বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা আর সাম্য-মানবিক মর্যাদা-সামাজিক সুবিচার। আর গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার এই চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, একটি দল একটানা একযুগের বেশি সময় ধরে বিনাভোটে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রাখার পর এখন তাদের নিজেদের কর্ম নিয়ে গর্ব করে বলার মতো কিছু নেই। তাদের আমলে প্রতিটি মেগা প্রজেক্টের প্রত্যেকটি প্রকল্পই দুর্নীতি আর মেগা লুটপাটের একেকটি জলন্ত উদাহরণ। এই সরকারের আমলে উন্নয়ন যা হয়েছে সেটি হচ্ছে দুর্নীতির উন্নয়ন। ফলে নিজেদের দুর্নীতি, দুরাচার অপকর্ম থেকে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তাদের এখনো একটাই অস্ত্র বিএনপি সম্পর্কে অকথ্য, অশ্লীল, অসত্য, অসভ্য প্রপাগান্ডা চালানো। এ কারণেই প্রতিদিন তারা রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিএনপির বিরুদ্ধে ক্রমাগত মিথ্যাচার করে চলছেন। বিএনপি নিয়ে টেনশনে তাদের ঘুম হচ্ছে না।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, গুম-খুন-অপহরণ-হামলা-মামলা-জেল-জুলুম চালিয়ে গত এক যুগের বেশি সময় ধরে বিনাভোটে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা এই অপশক্তির বিদায় চায় জনগণ। জনগণ দুর্নীতি-দুরাচার-পাপাচারে ভরা এই সমাজের পরিবর্তন চায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন