সূর্যমুখী তেলজাতীয় ফসল। উর্বর মাটি ও আবহাওয়া অনুকুল হওয়ায় গত বছর থেকে উত্তরাঞ্চলের পদ্মানদী বিধৌত নাটোরের লালপুরে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে সূর্যমুখীর চাষ। চলতি মৌসুমে লালপুুরে বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে সূর্যমুখীর। উপজেলার মাঠে মাঠে সবুজ পাতার মাঝে শোভা ছড়াচ্ছে হলুদ সূর্যমুখী ফুল। আর কিছুদিন পরেই শুরু হবে সূর্যমুখীর বীজ সংগ্রহের কাজ। অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কমও অল্প সময়ে বেশি লাভ হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। সূর্যমুখীর তেল পুষ্ঠিগুনে অনন্য হওয়ায় ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে লালপুরে সূর্যমুখীর চাষ হতে পারে নতুন সম্ভাবনার হাতছানি।
লালপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, ‘গত বছর কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় প্রথম সূর্যমুখীর পরীক্ষা মূলক চাষ শুরু হয়। এবার উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে ১ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে।’
সরেজমিনে উপজেলার ওয়ালিয়া মাঠে গিয়ে দেখা যায়,‘৩বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। সবুজ পাতার মাথায় সূর্যের মত ফুল ফুটে আছে। চারিদিকে সবুজ আর হলুদ মিলে এক মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। সূর্যমুখীর সুন্দর্য উপভোগ করতে ও ফুলের সঙ্গে নিজেকে মেলে ধরতে সূর্যমুখীর বাগান গুলিতে ভীড় জমাচ্ছে দর্শনার্থীরা। তুলছেন ছবিও।
এসময় কথা হয় সূর্র্যমুখী চাষী মোস্তফা বায়েজিদ কাদেরের সঙ্গে তিনি বলেন,‘এই প্রথম তিনি এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী চাষে রোগবালাইও কম। এক বিঘা জমিতে সূর্র্যমুখী চাষ করতে তার খরচ হয়েছে ৫-৭ হাজার টাকা। এই জমি থেকে ৭-৮ মণ সূর্যমুখীর বীজ পাওয়া আশা করছেন তিনি। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১৪-১৫ হাজার টাকা।’
আব্দুল হালিম নামের এক সূর্যমুুখী চাষী বলেন,‘তিনি ১৬ কাঠা জমিতে এই প্রথম সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। আগামীতে তিনি ২ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করবেন বলে জানান।’
লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন,‘গত মৌসুম থেকে উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে প্রদর্শণীর মাধ্যমে পরীক্ষামূলক ভাবে সূর্যমুখীর চাষ শুরু হয়েছে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় এক হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।’
সূর্যমুখী চাষে সরকারী পৃষ্টপোষকতা পেলে এই উপজেলায় ব্যাপক ভাবে সূর্যমুখীর চাষ হবে এবং উপজেলায় ভোজ্যতেলের চাহিদা অনেক অংশে মিটবে বলে মনে করেন স্থানীয় কৃষকরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন