শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

বাকৃবিতে অরক্ষিত রেলগেইটে বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি

বাকৃবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০২২, ৫:৫২ পিএম

রেল দুর্ঘটনায় যত প্রাণহানি হয়, তার ৮৯ শতাংশই ঘটে অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে। কখনো বাসের সঙ্গে, কখনো মাইক্রোবাসসহ অন্য যানবাহনের সঙ্গে আবার কখনোবা ট্রেনের সংঘর্ষে এসব প্রাণহানি ঘটে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) জব্বারের মোড়ে অবস্থিত ঢাকা-ময়মনসিংহগামী রেলপথের একটি লেভেল ক্রসিং গেইট প্রায় দুই বছর ধরে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অরক্ষিত অবস্থায় দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র জব্বারের মোড়ে থাকা লেভেল ক্রসিংয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা দেওয়ার জন্যে থাকা এক সেট যন্ত্রের একটি অংশ কাজ করলেও অপর অংশ নষ্ট। ট্রেন আসার মুহূর্তে দেখা যায় গেইটম্যান একপাশে যন্ত্রের মাধ্যমে রাস্তা বন্ধ করলেও অপর পাশ অরক্ষিত থাকে। মাঝে মাঝে অপর পাশে পতাকা নিয়ে গেইটম্যানকে দাঁড়িয়ে থেকে গাড়ি আটকাতে দেখা যায়। এর পরেও কেউ কেউ বাধার তোয়াক্কা না করে ঝুঁকি নিয়েই লেভেল ক্রসিং পার হচ্ছেন। আবার কেউ কেউ নষ্ট হওয়া যন্ত্রের সুযোগ নিয়ে রাস্তা পার হতে গিয়ে বিপদের সম্মুখীন হচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনাকালীন সময় থেকে যন্ত্রটি একবছরের বেশি সময় ধরে নষ্ট অবস্থায় পড়ে আছে। কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সকলকে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও তিনটি জায়গায় চলাচলের রাস্তা থাকলেও সেখানে কোনো লেভেল ক্রসিং না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারীরা। কিছু দিন পর পর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঘটছে ট্রেন দুর্ঘটনা । যা বর্তমানে খুবই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এমন ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা শঙ্কাগ্রস্ত। ক্যাম্পাসের মধ্য দিয়ে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর পর্যাপ্ত পরিমাণ হর্ণ না দেওয়া নিয়ে অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টেশন থাকা সত্তে¡ও তিন যুগের বেশি সময় ধরে সেখানে কোন ট্রেন থামে না। এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ করা হলেও বরাবরের মতো আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। চাকরিপ্রার্থী প্রতিটি পরীক্ষার্থীকে নিয়মিত ঢাকায় যাওয়া আসা করতে হয়। এতে প্রতিনিয়ত বাড়তি ভাড়া দেওয়া, সময়মতো ট্রেনে উঠতে না পারাসহ নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন চালু করা হোক এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর প্রাণের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল-আমিন বলেন, প্রতিটি মানুষের জীবনই অনেক মূল্যবান। কিছু মানুষের কাজের অবহেলায় সে জীবন নষ্ট হোক সেটা কারো কাম্য না। জব্বারের মোড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রাণ কেন্দ্র। এমন জায়গায় লেভেল ক্রসিং দীর্ঘ সময় ধরে বিকল থাকা মেনে নেওয়ার মতো না। শিক্ষার্থী ও পথচারীদের নিরাপত্তায় অবিলম্বে রেল গেইট মেরামত করা জরুরী। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন অতিদ্রæত চালু করাও এখন সময়ের দাবি।

এ বিষয়ে অটো রিকশাচালক ফারুক হোসেন বলেন, আমি প্রায় ৪ বছর ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রিকশা চালাই। এখন একপাশে একটি রেল গেইট নষ্ট হওয়ায় অনেকেই রেল ক্রসিং পাশ দিয়ে অতিক্রম করতে গিয়ে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় ট্রেন চলে আসছে কিন্তু পোল নামানো হয়নি, তাড়াহুড়া করে পোল নামানো হয়। এতে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এদিকে ট্রেন ক্যাম্পাসের মধ্যে দিয়ে আসার সময়ও বোঝা যায় না পর্যাপ্ত হর্ণেও অভাবে।

এ বিষয়ে কেওয়াটখালীতে লোকোশেডে কর্মরত উপসহকারী প্রকৌশলী কবির হোসেন রানা বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত। লেভেল ক্রসিং গেইট প্রতিস্থাপনের জন্য টেন্ডার এখনও হয়নি। যার জন্য আমরা এটি মেরামত করতে পারি নি। তবে আমি উপর মহলে বিষয়টি জানিয়েছি। তারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। আর আগামী সপ্তাহের মধ্যে বাঁশের মাধ্যমে একটি অস্থায়ী ক্রসিং গেইট স্থাপনের ব্যবস্থা করব।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন