মো. গোলাম ফারুক, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে
দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠের আমন ধানের ক্ষেত সবুজ থেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। আর অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই মাঠের ধানগুলো কাটা মাড়াই শুরু হবে। দিগন্ত মাঠজুড়ে আধা-পাকা আমন ধানের ক্ষেত দেখে জুড়ে যাচ্ছে কৃষক-কৃষাণীর মন প্রাণ। তাই তো প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার আশঙ্কায় কৃষকের মুখে ফুঠেছে হাসি। বগুড়ার তথা উত্তরাঞ্চলের শস্য ভা-ার হিসেবে পরিচিতি দুপচাঁচিয়া উপজেলা। জেলার ১২টি উপজেলার মধ্যে ধান উৎপাদনের দিক থেকে এবারও দুপচাঁচিয়া উপজেলা তুলনামূলকভাবে শীর্ষে স্থানে রয়েছে। উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সবুজের সমারোহ থেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। তা দেখে কৃষককূল আনন্দিত হলেও ধানের দাম নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত রয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, এবার উপজেলায় মোট ৫৪ হাজার ৮শ’ ৬৪ মে. টন, আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে। আমন মৌসুমে শুরুতেই ও মাঝামাঝি সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে যথা সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় খরায় তীব্রতায় ধানের অবস্থা খারাপ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলেও কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি সেচের মাধ্যমে ধান আবাদ করলেও পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমনের বাম্পার ফলনে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে আমন ক্ষেতে ধান সবুজ থেকে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন ক্ষেত সোনালী শীষে ভরা। আর অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই ধান কাটা মাড়াই শুরু হবে। উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল হোসেন জানান, এ উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে মোট ১২ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে উফসি ১২ হাজার ৩শ’ ৫০ হেক্টর এবং স্থানীয় ১শ’ ৫০ হেক্টর জমি নির্ধারণ করা হয়। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১৩ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমি নির্ধারণ করা হয়। আশা করা যাচ্ছে এবার এ উপজেলায় ৫৫ হাজার মেঃ টন আমন ধান উৎপাদিত হবে। উপজেলার জিয়াগনরের কৃষক মহসিন আলী, রেজাউল করিম রেজু, চামরুলের রমেন্দ্র নাথ পোদ্দার, তালোড়ার আলহাজ বেলাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন, সরদার পাড়া গ্রামের মোবারক হোসেন, খোলাশের হেলাল উদ্দিন, আবুল হোসেন আবুসহ এলাকার অনেক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জমিতে বৃষ্টি হবার আগে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা হয়েছিল। পরে বৃষ্টি হওয়ায় ধানের জোর অনেকাংশে বেড়ে গেছে। ফলে এবার আমন ধানের ব্যাম্পার ফলন আশা করছে। উপজেলার কৃষি অফিস থেকে প্রাপ্ত আরো এক সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় মোট আবাদযোগ্য জমি উৎপাদিত মোট ধানের ২৫ শতাংশ উপজেলাবাসী ব্যবহার করে এবং উৎপাদিত ৭৫ শতাংশ ধান চাল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘাটতি পূরণের জন্য বাণিজ্যিকভাবে পাঠানো হয়ে থাকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন