শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

খুলনায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রমরমা আবাসন বাণিজ্য

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০২২, ১২:৩৭ এএম

খুলনায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দখল করে তা প্লট আকারে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ‘সবুজ বাংলা আবাসন প্রকল্প’ নামে স্থানীয় একটি অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে জমিটি নিয়ে খুলনা যুগ্ম জেলা জজ তৃতীয় আদালতে ১১২/২১ নম্বর দেওয়ানী মামলা চলমান রয়েছে। আদালতের বিচারক শুনানি শেষে জমির ওপর সকল কার্যক্রম বন্ধে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, খুলনা মহানগরীর অদূরে হরিণটানা মৌজায় এসএ ২৩ নম্বর খতিয়ানের ৬০ দাগে মামলার বাদী কাজী মাহমুদুল বারির পারিবারিক ২.৫৬ একর জমি রয়েছে। সেখানে তারা পারিবারিকভাবে কেউ বসবাস করেন না। ওই জমির মধ্যে থেকে মাহমুদুল বারির ফুফু সাবেরা সিদ্দিকির নামে আলাদা ০.৪১৮৪ একর জমি ছিল।
সম্প্রতি সাবেরা সিদ্দিক বার্ধক্যজনিত কারণে দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। এ সুযোগে তার মেয়ে তাসনিমা সিদ্দিক অসুস্থ মায়ের কাছ থেকে ওই জমি নিজ নামে হেবাবিল রেজিস্ট্রিশন করে নেন। পরবর্তিতে তিনি তার মায়ের অংশসহ অন্যন্য শরীক অংশের জমি সবুজ বাংলা আবাসন প্রকল্পকে প্লট আকারে বিক্রির লিখিত অনুমতি দিয়েছেন।
বর্তমানে আবাসন প্রকল্পের হয়ে আকরাম হোসেন ও জেসিন চৌধুরী নামে দুই ব্যক্তি তাসনিমা সিদ্দিকির সঙ্গে যোগসাজসে পুরো জমি দখলে নিয়ে বিক্রির চেষ্টা করছেন। ঘটনা জানার পর ওই জমির একজন অংশীদার হিসেবে কাজী মাহমুদুল বারী বাদী হয়ে সাবেরা সিদ্দিকি ও অন্যন্যদের বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত গত ১ ফেব্রুয়ারি শুনানি শেষে পরবর্তি আদেশ না দেয়া পর্যন্ত জমিটিতে সকল কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী কাজী মাহমুদুল বারীর অভিযোগ, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্ত্বেও ওই জমিতে আবাসন প্রকল্পের পরিচালক আকরাম ও জেসিন চৌধুরি তাদের কাজ চলমান রেখেছেন। তারা একদিকে অবৈধভাবে আবাসন ব্যবসা করছেন। অন্যদিকে আদালত অবমাননাও করছেন। বিষয়টি স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।
তবে স্থানীয় লবণচরা থানার ওসি এনামুল হক আদালতের নির্দেশনার কোন কাগজ হাতে পাননি বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জমির পূর্বপ্রান্তে সবুজ বাংলা আবাসন প্রকল্পের অফিস রয়েছে। তার পাশেই আরেকটি পাকা স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া সেখানে সাইনবোর্ডে প্লট আকারে জমি বিক্রয় হবে লেখা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আবাসন প্রকল্পটির কোন অনুমোদন নেই। তারপরও তারা অবৈধভাবে প্লট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন সেখানে জমি কেনার জন্য লোকজন আসা যাওয়া করেন।
জানতে চাইলে সবুজ বাংলা আবাসন প্রকল্পের পরিচালক আকরাম হোসেন বলেন, জমির প্রকৃত মালিকের অনুমতিতে সেখানে আমরা মধ্যস্থতাকারি হিসেবে কাজ করছি। আমি কিংবা আমার প্রতিষ্ঠানের কেউ মাহমুদুল বারির জমি দখল করছি না। তাছাড়া আদালতের মামলা সম্পর্কে আমরা কেউ অবগত নই।
এদিকে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ না মেনে এভাবে নিচু জমি ভরাট করায় সেখানে অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ করায় একদিকে নগর উন্নয়ন বিঘ্নিত হচ্ছে। আরেকদিকে অবৈধ এসব ব্যবসায়িদের দখল করা জমি কিনে প্রতারিত হচ্ছে মানুষ।
এ ব্যাপারে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) এর পরিচালক (এস্টেট) মো. বদিউজ্জামান বলেন, কেডিএ এলাকায় প্লট অথবা ফ্লাট ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই আইন মেনে করতে হবে। কিছু অসাধু ব্যাক্তি আইন অমান্য করে এসব ব্যবসা করছেন বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন