খলিলুর রহমান, সিলেট থেকে : সারা দেশে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৬ ধাপে অনুষ্ঠিতব্য ওই নির্বাচনে আগামী ২২ মার্চ সারা দেশে ৭৫২টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হবে। এর মধ্যে সিলেটের সদর উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন রয়েছে। এদিকে ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ বিএনপির সমর্থন পেতে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। প্রার্থী চূড়ান্ত করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারাও তৎপরতা শুরু করছেন। অপর দিকে প্রার্থী চূড়ান্তের ক্ষেত্রে বিএনপি এখনো পিছিয়ে রয়েছে। কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা আসার পর প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। প্রথম ধাপে ৭৫২টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে সিলেট সদর উপজেলার ১নং জালালাবাদ ইউনিয়ন, ২নং হাটখোলা, ৩নং খাদিমনগর, ৪নং খাদিমপাড়া, ৫নং টুলটিকর, ৬নং টুকেরবাজার, ৭নং মোগলগাঁও ও ৮নং কান্দিগাঁও ইউনিয়ন রয়েছে। ওই ইউনিয়নগুলোতে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। সিলেটের ১নং জালালাবাদ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে মুহিত আলম শফিক ও আশ্রব আলী তৎপরতা চালাচ্ছেন। তাদের মধ্যে আশ্রব আলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানা গেছে। পরেরজন আওয়ামী লীগের কর্মী বলেও জানা গেছে। বিএনপি থেকে এখনো দেশের বাইরে অবস্থান করা ইউসুফ লন্ডনী এবং আরেক প্রবাসী তেরা মিয়ার নাম শোনা যাচ্ছে। জামায়াত থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান জালাল আহমদের সাথে অ্যাডভোকেট জামিল আহমদ রাজুর নাম শোনা যাচ্ছে। ২নং হাটখোলা ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন বিএনপির হাজী জমির উদ্দিন। তবে এ ইউনিয়নে সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থী নির্ধারণ হওয়ায় গতবার স্বেচ্ছায় আসন ছেড়ে দেয়া সাবেক চেয়ারম্যান আজির উদ্দিন বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন। নির্বাচন নাও করতে পারেন বর্তমান চেয়ারম্যান জমির উদ্দিন। এছাড়া বিএনপি থেকে সাকিব জামান ও রফিকুল বারীর নাম শোনা যাচ্ছে। খেলাফত মজলিস থেকে রফিকুজ্জামানের নাম শোনা যাচ্ছে। অপরদিকে, আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হাজী মোসাহিদ আলী, আওয়ামী লীগ নেতা খুর্শিদ আহমদ এবং দিলবর মেম্বার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন বিএনপির দিলওয়ার হোসেন। তিনি ছাড়াও বর্তমানে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বর্তমান ইউপি সদস্য ইলিয়াছ আলী। এছাড়া আওয়ামী লীগ থেকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক ইকলাল আহমদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি তারা মিয়া, অ্যাডভোকেট মখলিছুর রহমান প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ৪নং খাদিমপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বিলাল। তিনি ছাড়াও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফছর আহমদ ও যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গির আলম প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি থেকে মনসুর আহমদ চৌধুরী ও আইয়ুব আলী সজিব প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ৫নং টুলটিকর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মছব্বির। তিনি ছাড়াও আওয়ামী লীগ থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রমিজ উদ্দিন বাবুল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হিরণ মাহমুদ নিপু এবং প্রজন্মলীগ নেতা আলী হোসেন প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপি থেকে মুহিবুর রহমান প্রচারণা চালাচ্ছেন। ৬নং টুকেরবাজার ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান শহীদ আহমদ। এছাড়া আওয়ামী লীগ থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আফতাব উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল হক ফুল মিয়া ও যুবলীগ নেতা মোয়াজ্জিন হোসাইন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ৭নং মোগলগাঁও ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন বিএনপি থেকে সদ্য আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া শামসুল ইসলাম টুনু। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা আছন মিয়া ও ইরণ মিয়া প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিএনপি থেকে নাজিম উদ্দিন ও মাশুক মিয়া তৎপর রয়েছেন। ৮নং কান্দিগাঁও ইউনিয়নে চেয়ারম্যান রয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন। বিএনপি থেকে আহমদ আলী ও ইন্তাজ আলী তৎপর রয়েছেন। জামায়াত থেকে আব্দুল মনাফ তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে, প্রার্থী চূড়ান্ত করতে স্থানীয় আওয়ামী লীগও তৎপর রয়েছেন। গত শুক্রবার রাতে সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশফাক আহমদের নেতৃত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে দলীয় প্রার্থী হতে আগ্রহীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ জানান, দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে তারা সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছেন। দু-একদিনের মধ্যে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণ হবে। এদিকে, আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করলেও বিএনপি অনেকটা নীরব রয়েছে। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা না আসার আগ পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না। সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানান- এখনো কেন্দ্র থেকে কোন নির্দেশনা আসেনি। কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর আমরা তৃণমূলের মতামত নিয়ে এবং প্রকৃত বিএনপির প্রার্থীদের বাছাই করবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন