শৈলকূপা (ঝিনাইদহ) উপজেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহের শৈলকূপায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা চরম ঝুঁকিতে। গত ৫ মাস ওষুধ নেই ইউনিয়ন পর্যায়ের ১৪টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে। আশঙ্কাজনক হারে রোগী কমে যাওয়ার পাশাপাশি হাতুড়ে ডাক্তারগণ নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। ফলে গ্রামের নারী, শিশু ও গর্ভবতী রোগীরা বিপাকে পড়েছে। একাধিক কেন্দ্র ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে। এ ব্যাপারে শৈলকূপা হাসপাতালের টিএইচও খন্দকার ডাঃ মোঃ বাবর আলী জানান, পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের আওতাধীন ইউনিয়ন পর্যায়ের ১৪টি কেন্দ্রে গত অক্টোবর মাস থেকে ওষুধ সরবরাহ না পাওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। তবে কি কারণে ওষুধ বন্ধ রয়েছে সে বিষয়টি উক্ত বিভাগের টিএফপিও ভাল বলতে পারবেন। উপজেলা ফ্যামিলি প্লানিং অফিসার আবুল বাসার মোঃ আব্দুল মোতালেব জানান, সরকারের সরবরাহকৃত ২৬টি ওষুধের মধ্যে বেশকিছু আইটেম পরিবর্তন, পরিমার্জনের সিদ্ধান্ত হয়েছে কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন ওষুধ বন্ধ থাকায় রোগি দুর্ভোগ বেড়েছে। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, শৈলকূপার বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ডাক্তার আছে, রোগী আছে কিন্তু ওষুধ নেই। বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ আমলাতান্ত্রিক জটিলতার শিকারে পর্যবেসিত হয়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিকট সরকারের সেবাখাত। নারী, শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের সাধারণ চিকিৎসার জন্য এসব কেন্দ্রে গড়ে প্রতিমাসে প্রায় ১ হাজার রোগি সেবা পায়। সে হিসাবে গত ৫ মাসে ১৪টি কেন্দ্রের ৭০ হাজারের মত রোগী ওষুধ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে রোগীর সংখ্যা, বাড়ছে স্থানীয় পর্যায়ের হাতুড়ে ডাক্তারদের দৌরাত্ম্য, মৌখিক বিভ্রান্তি ও ইউনিয়ন সেবাখাতের অপপ্রচার। ওষুধ না থাকায় শুধুমাত্র মিনি প্রেসক্রিপশন লিখে রোগীদের ছেড়ে দেওয়ার কারণে তাদেরকেও নিয়ত পড়তে হচ্ছে নানা সমালোচনার মুখে। মনোহরপুর ইউনিয়নের এস.এ.সি.এমও দেলোয়ার হোসেন জানান, ওষুধ না থাকায় তাদের প্রতিনিয়ত রোগীদের বিভিন্ন সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। কচুয়া কেন্দ্রের এফ.ডব্লিউ.ভি বদরুন্নাহার বলেন, ওষুধ না দিতে পারলে বেশিরভাগ রোগীই ভুল বোঝে এবং তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ রোগীরা বিরূপ মন্তব্য করে। একই অবস্থা ১৪টি ইউনিয়নের প্রতিটি কেন্দ্রে। দায়িত্বে থাকা উপজেলা ফ্যামিলি প্লানিং অফিসার আবুল বাসার মোঃ আব্দুল মোতালেব জানান, সরকারের সরবরাহকৃত ২৬টি ওষুধের মধ্যে কিছু আইটেম পরিবর্তন, পরিমার্জনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু অদ্যাবধি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে দীর্ঘদিন ওষুধ বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ খাতটির এ জটিলতা কাটিয়ে সত্বর ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা অতীব জরুরি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন