দীর্ঘদিন পর অবশেষে দু’পাড়ে অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত হচ্ছে কুমার নদ। সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর দুই পাড়ে বেশ কিছু পাকা ও সেমিপাকা স্থাপনা এসকেভেটর দিয়ে গুড়িয়ে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকেরা। নদী তীরে উদ্ধারকৃত জায়গায় নদীগর্ভ থেকে এসকেভেটর দিয়ে মাটি তুলে এনে ভরাট করে তৈরি হচ্ছে রাস্তা। এখানেই তৈরি হবে জনসাধারণের প্রাতঃকালিন ও বৈকালিক ভ্রমনের জন্য দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে। এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারি প্রকৌশলী অনিক হোসেন জানান, কিছুদিন পূর্বে ভাঙ্গা পৌরসভা কার্যালয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে এ বিষয়ে একটি জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন ও ভাঙ্গা পৌর মেয়র এ এফ এম ডি রেজা। ভাঙ্গা পৌর এলাকার মধ্যে অবস্থিত কুমার নদের এ অংশটুকু যে কোন মূল্যে পূনঃখনন ও দুই পাড়ের দখলমুক্ত করে ওয়াকওয়ে নির্মাণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এরপর থেকেই শুরু হয় উচ্ছেদ ও পুনঃখননের কাজ।
২০১৮ সালে শুরু হওয়া প্রায় ২৭০ (দুইশ’ সত্তর) কোটি টাকা ব্যয়ে কুমার নদী পুনঃখনন এই মেগা প্রকল্পের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে তিনি জানান। এ প্রসঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার জহির মাজাহারের সাথে আলাপ কালে তিনি স্বীকার করেন যে, এই মেগা প্রকল্পের ৯০% এর বেশি কাজ সমাপ্ত হলেও ভাঙ্গা পৌর এলাকার ভেতরে অবস্থিত এই অংশের তেমন কোন অগ্রগতি ছিলো না। কারণ একা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে এ সব দখলদারদের উচ্ছে করা সম্ভব নয়। এ জন্য আরও ৫-৬টি সংস্থার একিভূত কার্যক্রম প্রয়োজন। সে হিসেবে এবারে এমপি মহোদয় ও মেয়র সাহেবের আন্তরিকতার কারনে এখানকার অংশটুকুর কাজ সম্পন্ন করতে পারছি। তার পরেও নদী পাড়ে যাদের বড় বড় স্থাপনা রয়েছে তারা প্রকারঅন্তরে বাধা সৃষ্টি করে বিভিন্ন উপায়ে দীর্ঘ সূত্রিতা তৈরি করে থাকে তাই অনেক কিছু মিনিমাইজ করে কাজটি এগিয়ে নিতে হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ ও প্রশাসন আমাদেরকে সর্বতোভাবে সহায়তা করছেন।
নদীপাড়ের উচ্ছেদ ও খনন কাজ দেখতে প্রতিদিন প্রচুর লোক লন্ডন ব্রিজের ওপরে ভীড় জমাচ্ছে। এদেরই একজন মো. জমির মুন্সী বলেন ‘কাজতো ভালই হতেছে। নদীটা না কাটলে ময়লায়ই ভরাট হয়ে যাইতো। এখন দেখার বিষয় হলো শেষ পর্যন্ত কাজটি সম্পূর্ণ শেষ করতে পারে কিনা? না গতবারের মতো আবার বন্ধ হয়ে যায়।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন