রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে দেশি মদের দোকানে নিত্য পণ্যের মতো অবাধে বিক্রি হচ্ছে মদ। আর ওই মদের দোকানে ভোর থেকে মদ কিনতে লম্বা লাইন তৈরি হয় নিয়মিত। অবৈধভাবে মদ পাচারের সময় মাঝে মধ্যেই র্যাব, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্র অধিদপ্তর ও পুলিশের অভিযানে, ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, রিকশা চালকসহ বহনকারীরা গ্রেফতার হলেও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে আসল অপরাধীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ১১ টার সময় মদ কেনার জন্য ক্রেতারা লম্বা লাইন দিয়ে সিরিয়াল অনুযায়ী কেউ প্লাস্টিকের বোতল হাতে কেউ ডোপ হাতে কেউ আবার বস্তার মধ্যে কয়েকটি ডোপ নিয়ে পাশেই দাঁড়িয়ে আছে দেখলে মনে হয় এ যেন সাধারণ কোন পণ্য দোকান। কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে যেই টাকা আর ডোপ দিচ্ছে তাকেই চাহিদা মত মদ দেয়া হচ্ছে। মদের বেশির ভাগ ক্রেতাই নেশা খোর। নেশা করতেই তারা প্রতিদিন মদ কেনেন। অনেকই ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, রিকশা করে মদ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে এ রকম কারবার, সেই দোকানের সামনে প্রতিদিন স্কুল কলেজের ছেলে মেয়ে যাওয়া আসা করছে। এই দেশি মদের দোকান বাজার থেকে না সরালে বিশেষ করে যুব সমাজ ও ছাত্র সমাজ ধবংস হবে।
গোয়ালন্দ বাজারের আড়ৎপট্রি সরকার অনুমোদিত রনজিৎ সরকার ও শুকুমার সরকারের দেশি মদের দোকান রয়েছে। অনুমোদন দোকানে অঅনুমোদন ক্রেতাদের ভীর, সেখানে সাংবাদিকের উপস্থিত টের পেয়ে মদের খুচরা ক্রেতারা কেটে পড়ে। পালাতে থাকে মদের পাইকারী ক্রেতারা।
স্থানীয়রা জানান, গোয়ালন্দ থেকে যারা মদ কিনে নিচ্ছে তাদের অনেকের দেশি মদ খাওয়ার লাইসেন্স নেই। কিন্তু প্রতিদিন মদ কেনেন কোন রকম বাধা বিঘ্ন ছাড়াই এবং মদ খেয়ে মাতলামি করে। লাইসেন্সধারী মানুষের কাছে ছাড়া এই মদ বিক্রি করা নিষেধ থাকলেও গোয়ালন্দ দেশি মদের দোকানে লাইসেন্স ছাড়াই নেশা খোরদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে মদ। এতে এলাকার কিশোর, যুবক, শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বৃদ্ধাসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ দিনে দিনে নেশায় আসক্ত হচ্ছে। আর নেশার টাকা যোগান দিতে গিয়ে তারা বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। শুধু গোয়ালন্দ নয় পাশপাশের থানা এলাকার মাতালরাও মদের দোকানে গিয়ে মদ ক্রয় করে খেয়ে মাতাল হয়ে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক চালাচ্ছে এতে করে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। মদ্যপান করে এলাকার উঠতি বয়সের তরুণও যুবকেরা বিভিন্ন অসামাজি কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। পাশেই দৌলতদিয়া যৌনপল্লী থাকার কারনেই অনেকই মদ পান করে পতিতাপল্লীতে প্রবেশ করে মাতলামী করে। অতি দ্রুত লাইসেন্সের আড়ালে এই অবৈধ কারবার বন্ধ না করা গেলে দিনে দিনে মাদকাসক্ত হয়ে পড়বে গোয়ালন্দ উপজেলার যুব সমাজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যৌন পল্লীর এক বাড়িওলা বলেন, আমি তো আগে মদের দোকান করেছি। সে সময় মদের দাম ছিল ১শ’ টাকা তার পরে ২শ’ টাকা লিটার। বর্তমানে যৌন পল্লীতে ৫শ’ টাকা লিটার মদ বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার লিটার মদ যৌন পল্লীতে ডুকছে। গোয়ালন্দ মদের দোকানের মদ ছাড়া এখানে মদ আসবে কোথায় থেকে। মদ পাইকারি কেনে মোসা, রতন, খলিল, আজিজ, লাল মিয়া, আরো অনেকেই।
রজিৎ ও শুকুমার সরকারে দেশি মদের দোকানের ম্যানেজার সৌরভ বলেন, লাইসেন্স প্রতি একজন মানুষ প্রতি মাসে সাড়ে ৯ লিটার মদ সরবরাহ করার নিয়ম রয়েছে। গোয়ালন্দ ৪২৮ জনের মদ খাবার লাইসেন্স রয়েছে। লাইসেন্সধারী একজন প্রতি মাসে সাড়ে ৯ লিটার মদ কিনতে পারবে। আমাদের মদের দোকান সকাল ১০ হতে ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকে। কিন্তু প্রতিদিন ভোর রাতে গোপনে কয়েক শত লিটার মদ বিক্রি করে যৌনপল্লীতে ডুকানো হয়। সে বিষয়ে তিনি অস্বীকার করেন।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুদার বলেন, আমরা বিষয়টি দেখছি। সাধারণ পাবলিক মানে যাদের পারমিড নেই তাদের কাছে বিক্রি করছে, এ বিষয়টি দেখছি।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরির্দশক দেওয়ান মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান বলেন, যাদের দেশিয় মদ খাওয়ার পারমিট আছে তারাই শুধু দেশিয় মদের দোকান থেকে মদ কিনতে পারবে।
তাহা ছাড়া অন্য কারো কাছে বিক্রি করা যাবে না। পারমিড ছাড়া কারো কাছে মদ বিক্রি করলে আমাদের কে জানাবেন আমরা গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন