সখিপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা
টাঙ্গাইল বন বিভাগের সখিপুরে সামাজিক বনায়নের গাছ নিলামে বিক্রির সময় যেসব ব্যবসায়ী জাল পে-অর্ডারের সাথে জড়িত প্রমাণিত হবার পরও বিভাগীয় বন কর্মকর্তা টাঙ্গাইল (ডিএফও) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে তালবাহানা করছেন। অথচ ডিএফও মাসুদ রানা বিভিন্ন ব্যাংকের বিডি এডভাইজ এ তথ্য নিয়ে জানতে পেরেছেন জাল পে-অর্ডারের সাথে জড়িত কাঠ ব্যবসায়ী মোঃ মাসুদ রানা, কামরুল হাসান বাবুল, আক্তারুজ্জান রিপন, ফারুক খান, শাহজামাল, শফি তালুকদার, বাদল, সৈয়দ আলাউদ্দিন সহ আরো কয়েকজন এবং সখিপুর গজারিয়া গ্রামের মৃত হায়দার মাষ্টারের ছেলে মাসুদ রানা সকলকে জাল পে-অর্ডার সরবরাহ করেছে বলে টাঙ্গাইল ডিএফও অফিস সূত্রে জানা গেছে। বিগত কয়েক বছর যাবৎ এ চক্রটির বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের প্লট নিলামে (টেন্ডারে) পে-অর্ডার (বিডি) জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিলামে পে-অর্ডার জালিয়াতির অভিযোগ এনে কয়েকজন নিলাম ব্যবসায়ী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা টাঙ্গাইল (ডিএফও) সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জাল বিডির সাথে জড়িত কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে জানা যায়, এ বছর ৫ সেপ্টেম্বর ও ২৯ মার্চ বনবিভাগের বৃক্ষ ক্রয়ের নিলামে কোটি টাকার পে-অর্ডার জালিয়াতি করে ওই চক্র সর্বোচ্চ দরদাতা হিসাবে প্রায় একশ’ সামাজিক বনায়নের প্লট নিলামের মাধ্যমে পেয়েছে। একজন ক্রেতা সামাজিক বনায়নের প্লটের যা মূল্য নির্ধারণ করে সিডিউলে লিখে সেই মূল্যের শতকরা ২৫ ভাগ টাকা নিলামের নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংকের মাধ্যমে পে-অর্ডার করতে হয়। চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল বন বিভাগের বৃক্ষ নিলামে পে-অর্ডার জালিয়াতি করে আসছে বলে নিলামে অংশগ্রহণকারী একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন। নিলামে অংশগ্রহণকারী বৈধ ব্যবসায়ীরা ৫/৬টির বেশী লট পায় না, কিন্তু জালিয়াত চক্র ৮০/১০০টি লট নিলামে পেয়ে যায়। বিপুলসংখ্যক লটের নিলামে অংশগ্রহণ করতে হলে প্রায় ১০ কোটি টাকার পে-অর্ডার করতে হয়। অথচ জালিয়াত চক্রের ব্যাংকে কোন টাকা জমা না দিয়েই জাল পে-অর্ডার তৈরী করে নিলামে অংশগ্রহণ করে থাকে। জাল বিডির সাথে জড়িত মাসুদ রানা বলেন, বন বিভাগের লোকজন বিডি পরীক্ষা না করেই কি লট কাটার অনুমতি দিয়েছে! এ ব্যাপারে হতেয়া রেঞ্জ অফিসার আব্দুল মোমেন খান বলেন, কড়ইচালাসহ কোন বিটে জাল বিডির মাধ্যমে টেন্ডারে কোন ব্যবসায়ী লট পেয়ে থাকলে সেটা ডিএফও স্যার জানেন, আমি কিছু জানি না। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা টাঙ্গাইল (ডিএফও) মোঃ মাসুদ রানা বলেন, পেÑঅর্ডার (বিডি) জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছি। জাল পে-অর্ডার ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ হচ্ছে। ইতিমধ্যে নিলামে জাল বিডি ব্যবহার করে যে সব লট পেয়েছে সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা টাঙ্গাইল (ডিএফও) জাল পে-অর্ডারকারীদের সনাক্ত করার পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। ঊর্ধ্বতন কর্র্তপক্ষের নিকট কোটি টাকা পে-অর্ডার জালিয়াত চক্রদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন নিলামে অংশগ্রহণকারী বৈধ কাঠ ব্যবসায়ীরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন