দেশের বৃহত্তম আলু উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত মুন্সীগঞ্জ। এই জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আলু। গোল সোনার দেশ মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে এখন চলছে আলু উত্তোলনের ধুম। ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাব এবং এবার জমি থেকে পানি নামতে দেরি হওয়ায় আগাম আলু চাষ ব্যাহত হয়। তাই এবার আলু উত্তোলন দেরিতে শুরু হয়েছে। উপজেলা জুড়ে কৃষক এখন আলু তোলায় ব্যস্ত। ক্ষেত থেকে সারি সারি আলু তোলার পর বস্তাবন্দি করা থেকে শুরু করে কোল্ড স্টোরেজ কিংবা বাজারজাত করণে আলু চাষিদের চারপাশে তাকানোর ফুসরত নেই। গোল আলু তো নয়, কৃষকের কাছে এ যেন একেকটি গোলাকার সোনা।
এদিকে প্রান্তিক চাষিরা খুব চিন্তিত, ঘূর্ণিঝড়ের জাওয়াদের প্রভাবের রোপণ করা আলু নষ্ট হয়ে যাওয়ায় জমিতে পুনরায় আলু রোপণ করতে হয়েছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আলু আবাদ করছেন তারা তাই এবছর আর্থিক ক্ষতির মুখে পরবেন বলে মনে করছেন প্রান্তিক কৃষকরা। গত বারের তুলোনায় এবার তেমন ভালো ফলন হয়নি। যদি বাজার মূল্য ভালো থাকে তাহলে হয়তো লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় এবার ৩৩শ’ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছে।
গতকাল সরেজমিনে উপজেলার গাঁওদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দেখা গেছে- কৃষকেরা আলু তোলায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। উপজেলায় মাঠের পর মাঠ জুড়ে যেন গোল সোনা আলুর সমারোহ। চারপাশে যেদিকে দৃষ্টি পড়ে সর্বত্র শুধুই আলু আর আলুর দৃশ্য চোখে পড়ে। দেখা গেছে- কৃষকরা মাঠের মাটি খুঁড়ে তুলে আনছে একেকটি গোল সোনা। আবার উত্তোলন শেষে মাঠেই গোল সোনার স্তুপ করে রাখছেন। পরে এ আলু বস্তাবন্দি করে বিক্রির জন্য বাজারজাত করা হবে। আবার কেউ কেউ এখনই বস্তাবন্দি সংরনের জন্য কোল্ডস্টোরেজে নিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলার হাড়িদিয়া গ্রামের আলু চাষি সিরাজুল ইসলাম জানান, এই বছরে ৫ একর জমিতে আলু চাষ করছি, জমি থেকে পানি নামতে দেরি হওয়ায় এক মাস লামিতে (দেরিতে) আলু রোপন করতে হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ফলন কম হয়েছে। যদি বাজার মূল্য ভালো থাকে তাহলে হয়তো লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এবার জমি থেকেই ২ মন ওজনের প্রতি বস্তা ভর্তি আলু বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০ টাকা করে। এ দাম ২ সপ্তাহ খানেক শেষে আরো বাড়বে বলে তারা আশাবাদী।
গাঁওদিয়া ইউনিয়নের আলু চাষি কার্তিক দাস জানান, এ বছর তিনি ১০ একর জমিতে আলুর চাষ করেছেন। ঘুর্নিঝড় জাওয়াদের কারনে তার পুনরায় ৭ একর জমিতে আলু রোপণ করতে হয়েছে। তাই এবছর আলু চাষে লোকসানে পরবেন বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আলু চাষে ৪ হাজার ২শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। ঘুর্ণিঝড় জাওয়াদে কারনে এ লক্ষ্যমাত্রা পূরন হয়নি। তাই এবার ৩৩শ’ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন