এ যেন শেষ হয়েও হইল না শেষ। পদ হারিয়েও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদই সামলাবেন ইমরান খান। আগামী ১৫ দিন তাকে এই দায়িত্বেই বহাল রাখা হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি। ঠিক কী ক্ষমতা থাকবে ইমরানের?
দেশের সংবিধানের ২২৪-এ (৪) নম্বর ধারা অনুযায়ী, বর্তমানে কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হবে পাকিস্তানে। তবে যতদিন না পর্যন্ত কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হচ্ছে, ততদিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবেন ইমরান খান। ফলে নিজের পদ হারানোর পরও গদিচ্যুত হলেন না ইমরান।
পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই পাকিস্তানে কেয়ারটেকার প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা হতে পারে। ফলে ১৫ দিন পর্যন্ত নিজের চেয়ারেই থাকতে পারবেন ইমরান খান। যদিও সংবিধানের ৯৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত ইমরান খানকেই এই পদে বহাল রাখতে পারেন।
উল্লেখ্য, রবিবার রাতেই সরকারিভাবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় তাকে। ইমরান খান আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নন। সার্কুলার জারি করে জানিয়ে দেয় পাকিস্তান ক্যাবিনেট। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। এরপরই সংবিধানের একাধিক ধারা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ইমরান আহমেদ খান নিয়াজি আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নন।
রবিবার সকালে প্রাথমিকভাবে স্বস্তি পেয়েছিলেন ইমরান খান। তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেন পাকিস্তানের National Assembly-র ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। তিনি বলেছিলেন, "পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের (Pakistan President Imran Khan) বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব সেই দেশের সংবিধানের ৫ নম্বর ধারার পরিপন্থী।"
এরপর ন্যাশানাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে নতুন করে নির্বাচনে যাওয়ার প্রস্তাব দেন ইমরান খান। তার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে ডেপুটি স্পিকার বলেন, অনাস্থা প্রস্তাব আনা সংবিধান বহিঃভূত। অর্থাৎ অ্যাসেম্বলি ভেঙে আপাতত নির্বাচন করানোর পথ বেছে নেন ইমরান। তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে নির্বাচন ঘোষণার আবেদন জানান। দেশবাসীকে ভোটের জন্য প্রস্তুত হওয়ার কথা বলেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। অর্থাৎ আস্থা ভোটের মুখোমুখিই হতে হয়নি ইমরান খানকে।
ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, অনাস্থায় হেরে কুর্সি ছাড়তে হলে সেটা ইমরানের কাছে অত্যন্ত অপমানজনক হত। যদিও তাকে উৎখাত করে দেওয়ার বিষয়টিও ভালো চোখে নেননি ইমরান। অনাস্থা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলেও অবশ্য ইমরানের হার নিশ্চিত ছিল। কারণ, সরকার পক্ষ অনেক আগেই সংখ্যা গরিষ্ঠতা হারিয়েছে। এই অবস্থায় এই ধরনের সাংবিধানিক হাতিয়ার ব্যবহার ইমরান খানের কাছে লাভজনকই হয়েছে! সূত্র: টিওআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন