এএফএম ফারুক-চান মিয়া, ছাতক (সুনামগঞ্জ) থেকে
ছাতক-মুক্তিরগাঁও-শিমুলতলা-পীরপুর সড়কে চার মাস যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকার পর অবশেষে সুরমা নদীতে তলিয়ে গেছে। পানি কমার সাথে সাথে সড়কের মুক্তিরগাঁও এলাকায় সড়কটি মাটির নিচে প্রায় ৫০ ফুট দেবে গভীর গর্তে পরিণত হয়। এর সাথে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে অসংখ্য বসতবাড়ি, মসজিদ, স্কুল-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙন কবলিত এ সড়কে দীর্ঘদিন থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়–য়া ছাত্রছাত্রীসহ এলাকার বিপুল সংখ্যক জনসাধারণ। স্থানীয়রা জানান, গত ২০ আগস্ট থেকে এ সড়কের মুক্তিরগাঁও এলাকায় সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙনের মুখে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এরপর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রায় দু’লক্ষাধিক টাকার বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরি করে বালুর বস্তা ফেলে চলাচলের উপযোগী করার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু সুরমা নদীর পানি কমে আসার সাথে সাথে ভাঙন কবলিত এলাকা প্রায় ৫০ ফুট মাটির নিচে দেবে যায়। এতে বসতবাড়ি, স্কুল, মাদ্রাসা, সড়কে অবশিষ্টাংশ মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। এক যুগের বেশি সময় থেকে সুরমা অব্যাহত ভাঙনের কবলে সড়কের ২৫টির মতো সড়কের পাকা স্ল্যাব, ফসলি জমি, বাড়িঘর, গাছপালাসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অসংখ্য পরিবার বাড়িঘর, সহায়-সম্পদ হারিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে গেছে। ২০০৫ সালে সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে ২৫ লাখ টাকার পাকা স্ল্যাব দিয়ে ভাঙন রোধের চেষ্টা করেন। এরপর এখানে আর কোনো বরাদ্দ না আসায় এখন পাকা সড়ক ছাড়াও বাড়িঘরসহ স্কুল-মাদ্রাসা ভাঙনের কবলে পড়েছে। জানা গেছে, গত কয়েক বছরে মুক্তিরগাঁও, শিমুলতলা, হরিশপুর, পীরপুর, গৌরীপুরসহ আট গ্রামের প্রায় ৩ শতাধিক বাড়িঘর নদীতে তলিয়ে গেছে। আরো নদী ভাঙনের আশঙ্কায় রয়েছে জামেয়া মোহাম্মদীয়া মুক্তিরগাঁও মাদ্রাসা, মুক্তিরগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাবেক মেম্বার বসির উদ্দিন, তোতা মিয়াসহ পার্শ্ববর্তী অসংখ্য বাড়িঘর। প্রায় ৫ কিঃমিঃ এ সড়কে প্রত্যহ মুক্তিরগাঁও, শিমুলতলা, হরিশপুর, রংপুর, নানশ্রী, পীরপুর, গৌরীপুরও মিত্রগাঁওসহ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল ও ইছাকলস ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন যাতায়াত করে থাকেন। এ ব্যাপারে কালারুকা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল হক, সাবেক মেম্বার সুলেমান মিয়া, নূরুল হক, আব্দুল মতিন, আরশ আলী, নূরুল ইসলাম, বর্তমান মেম্বার ফজলু মিয়া, আব্দুল মুকিত, ব্যবসায়ী মনোহর আলীসহ স্থানীয় লোকজন জানান, পানি কমে আসায় সড়কটি নদীতে তলিয়ে গেছে। ফলে সড়ক যোগাযোগ বন্ধসহ সাধারণ মানুষের চলাচল ও বন্ধ হবার আশঙ্কা রয়েছে। তারা এখানে নদী ভাঙন রোধের স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন