বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ভবনে মাদকসেবীদের মিলনমেলা, নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ

বার বছরেও শুরু হয়নি সান্তাহার হাসপাতালের কার্যক্রম

প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মনসুর আলী, আদমদীঘি (বগুড়া) থেকে

বগুড়ার সান্তাহারের ২০ সয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালটি এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না। সরকার পরিবর্তনের কারণে ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদাসীনতায় দীর্ঘ ১৬ বছরেও চিকিৎসাসেবা চালু না হওয়ায় এ হাসপাতালের ভবনের দখল চলে গাছে অপরাধীচক্রের কবলে। হাসপাতালের ভবনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে কেউ না থাকায় এর জানালা-দরজাসহ কোটি কোটি টাকা মূল্যের মূল্যবান সরমঞ্জাম নষ্ট ও চুরি হয়ে যাচ্ছে। অরক্ষিত ভবনগুলোর বিভিন্ন কক্ষ ব্যবহার করছে এলাকার চিহ্নিত মাদকসেবীরা। প্রতিনিয়ত এখানে বসে মাদকসেবীদের মিলন মেলে। এর সাথে চলে যৌনকর্মীদের নিয়ে চলে অসামাজিক কাজ। জানা যায়, বিগত চারদলীয় জোট সরকারের শাসনামলে শহরের রথবাড়ী এলাকায় প্রায় এক একর জমির উপর হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। সিএমএমইউ এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এই কাজের অর্থায়ন ও তত্ত্বাবধান করে। এর নির্মাণ ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৩৩ লাখ ১২ হাজার টাকা। ততকালীন জোট সরকারের বিদায়লগ্নে হাসপাতালের পুরো কাজ সম্পন্ন না হতেই এলাকার জনগণের চিকিৎসার স্বার্থে অত্র মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে গত ২০০৬ সালের ২২ অক্টোবর স্থানীয় এমপি আব্দুল মোমেন তালুকদার এই ভবনটি উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর এই হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জামসহ কয়েকজন ডাক্তার, নার্সসহ বেশকিছু কর্মচারী নিয়োগ করা হলেও এই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা শুরু হয়নি এবং এর কিছুদিনের মধ্যে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে হাসপাতালের মূল ভবন ও স্টাফ কোয়ার্টারগুলো হয়ে যায় অরক্ষিত। দীর্ঘ ১৬ বছরেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ এই হাসপাতালটি রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে এই ভবনের জানালা-দরজাসহ মূল্যবান আসবাবপত্রগুলো চুরি ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি পুরো হাসপাতাল এলাকা চলে গেছে অপরাধী ও মাদকসেবীদের দখলে। শহরবাসী জানান, যে হাসপাতালে আর্ত-মানবতার সেবা নিশ্চিত করার কথা, সেই হাসপাতালটি এখন অপরাধীচক্রের আস্তানা। বেশিভাগই কাচের জানালাগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে, কাঠের জানালা-দরজাগুলো উই ও ঘুনপোকা খেয়ে নষ্ট করে ফেলেছে। মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাচ্ছে। অচিরে এর কোনো সুব্যবস্থা করা না হলে চোরেরা এই বিল্ডিং ভেঙে ইটগুলোও চুরি করে নিয়ে যাবে। সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল মোমেন তালুকদার বলেন, এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি এবং সংসদীয় কমিটিতে আবেদন করেছি। তিনি আরো জানান, এই হাসপাতালের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় দুই কোটি টাকার সরঞ্জাম আদমদীঘি স্ব্যস্থ্য কমপ্লেক্সে পড়ে আছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় সরঞ্জামগুলো ব্যবহার না করার কারণে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু বলেন, হাসপাতাল নিয়ে রাজনীতি করার কোনো কারণ নেই। একটি সাধারণ মানুষও যেন বিনা চিকিৎসায় মারা না যায় এজন্য বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা খাতে ব্যাপক বরাদ্দ দিয়ে আসছে। এটি দাফতরিক জটিলতার কারণে চালু হতে বিলম্ব হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি চালু করা সম্ভব হয় এজন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা রয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিকট সান্তাহারবাসী অবিলম্বে এই হাসপাতালটি চালু করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন