বরগুনার বেতাগী উপজেলার সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুরা বাজার-মল্লিক বাড়ি সড়কে কালভার্ট ভেঙে পড়ে থাকায় মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা নতুন করে নির্মাণের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কিছুই হচ্ছে না।
জানা গেছে, পাঁচ বছর ধরে ভেঙে আছে এই সড়কের একটি কালভার্টের মাঝের একাংশ। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ভাঙা জায়গায় মেরামত বা নতুন কালভার্ট নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই কিলোমিটারের এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা ক্ষুদে শিক্ষার্থীসহ ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই কালভার্টটি ব্যবহার করতে হচ্ছে তাদের।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুরা বাজার-হুমায়ুন কবির মল্লিক বাড়ি সড়কের কিসমত ভোলানাথপুর এলাকার কাছে প্রায় ৫ বছর আগে কালভার্টটির পাটাতনের মাঝখান ভেঙে যায়। এরপর থেকে ওই রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে অটোরিকশা, ভটভটিসহ ছোটখাটো যানবাহন চলাচল করত। বর্তমানে ভাঙা অংশের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় ওই এলাকার দক্ষিণ ভোলানাথপুর, কিসমত ভোলানাথপুর, লক্ষীপুরা, রানীপুর, শ্রীনগরসহ প্রায় ১০টি গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় লক্ষীপুরা বাজারের ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ২৭ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের কালভার্টের মাঝের পাটাতনের অংশ ভেঙে পড়ে আছে। ইঞ্জিনচালিত টমটমের ধাক্কায় অনেক আগে সাইড ওয়ালও ভেঙে গেছে। নতুন করে কালভার্টির ধস ঠেকাতে এর নিচে গাছের খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। তবে এসব গাছের খুঁটি নড়বড়ে। যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। চালকেরা এই অংশ পার হচ্ছেন সাবধানে।
ভাঙা এই কালভার্টটি পেরিয়ে একটু সামনেই উপজেলার অন্যতম ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভোলানাথপুর দারূল উলুম মাদ্রাসা। এখানে দেশের বিভিন্ন এলাকার ছাত্ররা লেখাপড়া করে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদে শিক্ষার্থী মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ জানান, তাদের চলাচলের জন্য এই ভাঙা কালভার্টটিই একমাত্র ভরসা। তাই তাদের যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
দক্ষিণ ভোলানাথপুর গ্রামের ধান-চাল ব্যবসায়ী শাহ-আলম উজ্জল সিকদারসহ একাধিক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ায় কারণে ধান, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহনে একদিকে যেমন বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যবসা ক্ষেত্রে ব্যাপক লোকসানের শিকার হচ্ছেন তারা। কালভার্টটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে দু-একটি যানবাহন পারাপার হলেও এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করা কয়েক হাজার মানুষ তাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পরিবহন করতে পারছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াজুল কবির বাবু বলেন, প্রায় পাঁচ বছর যাবত কালভার্টটি ভেঙ্গে পড়ে আছে। এতে এ সড়ক দিয়ে মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কালভার্ট ভাঙা হওয়ায় বড় গাড়ি চলে না। এখন ঝুঁকি নিয়ে শুধু ইঞ্জিনচালিত টমটম ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করে।
ভোলানাথপুর দারুল উলুম মাদরাসা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব আব্দুস কুদ্দুস মল্লিক অভিযোগ করেন, ‘কালভার্টটি নির্মাণে আমরা একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন-নিবেদন করেছি। তারা আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বেতাগী উপজেলা প্রকৌশলী মো. রাইসুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে আমি নতুন যোগদান করেছি। তাই এ ভাঙা কালভার্ট সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে এত দিনে কালভার্টটি কোন প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত না হয়ে থাকলে নতুনভাবে নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন