কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গত কয়েক দিন থেকে প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। আগাম ভারি বৃষ্টিতে নদী-নালা ভরে গিয়ে ডোবা ও মাঠের ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। ডোবা ও নালার ধান গাছের টুটি পর্যন্ত পানি। বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ধানক্ষেত পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আশঙ্কা রয়েছে। ধান ক্ষেতগুলোর কেবল ঢ্যাস (পেটে শিষ) এসেছে। রমজানের শুরু থেকেই আকাশ মেঘাছন্ন, দিনে সূর্যের আলোর দেখা নেই, মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি নামে। আকাশে আষাঢ়ের আমেজ। টানা বৃষ্টিতে ফসলের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষক। বড়ভিটি গ্রামের কৃষক সামছুল হক বলেন, বোরো ধানক্ষেত সেচ নির্ভর। চৈত্র মাসে খরা বেশি হলে সেচ বেশি দিতে হয়, রোদ আর সেচের পানিতে ধানের দানা ভালো হয়। এতে ধানের পাতান (চিটা) কম হয়। ফলন বেশি হয়। বৃষ্টি বেশি হলে ধানে পাতানের পরিমান বেশি হয় ফলন কম হয়। প্রখর রৌদ্রর বদলে প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। চাষিরা ধানক্ষেতে পানি নেওয়ার পরিবর্তে বৃষ্টির পানিতে ভর্তি ডোবা নালায় মাছ ধরে অলস সময় কাটাচ্ছেন। উপজেলার চর বড়লই, চর বড়ভিটা, চর মেখলি, চর কাগজি পাড়া, সুইস গেটের পাড়সহ নিচু জমিতে পানি জমে ধানের ঢ্যাস পযর্ন্ত তলিয়ে গেছে। বৃষ্টি না কমলে এসব ধান ক্ষেতের ফলন কমে যেতে পারে। ফুলবাড়ী ইউনিয়নের দাশিয়ার ছড়া হতে ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের জোনালির ঘাট পর্যন্ত নীল কুমার নদের বুকে চাষকরা শত শত একর জমির ধান এখনও কোথাও কোথাও পানিতে তলিয়ে আছে। নীলকুমার নদের তলদেশ ভরাট করে বোরো চাষ, কোথাও বা পানি প্রবাহের রাস্তা বন্দ করে ঘের দিয়ে অনেকে মাছ চাষ করছেন। ফলে বৃষ্টির পানি নেমে যাওয়ার ধীর গতির ফলে শত শত একর জমির ধান নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু এলাকার ধান তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। দাসিয়ার ছড়া গ্রামের কৃষক মানিক ব্যাপারী বলেন, তার নীল কুমার নদে লাগানো সাড়ে ৭বিঘা জমির ধান তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। চন্দ্রখানা গ্রামের মো. মোজাফফর মিয়ার ১বিঘা, তারিণি চন্দ্র ৩ বিঘা, ও আলামিন মন্ডলের ৩ বিঘাসহ অনেকেরই ধানক্ষেত ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার লিলুফা ইয়াছমিন বলেন, এ বছর ফুলবাড়ীতে ১০.২১৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ করা হয়েছে। ডোবা নালাসহ নিচু জমি আছে ১৩৫ হেক্টর। বৃষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি হলে নিচু জমির পানি নেমে গেলে ধানের ক্ষতির পরিমান কম হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন